1. sardardhaka@yahoo.com : adminmoha : Sardar Dhaka
  2. nafij.moon@gmail.com : Nafij Moon : Nafij Moon
  3. rafiqul@mohajog.com : Rafiqul Islam : Rafiqul Islam
  4. sardar@mohajog.com : Shahjahan Sardar : Shahjahan Sardar
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২১ পূর্বাহ্ন

যে কারণে দেশে নেই অ্যাপলের অফিস

মহাযুগ নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০১৭
  • ২৬৩ বার

প্রতিবেদক : দেশে বিশ্বখ্যাত তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য ও সেবা উৎপাদনকারী অনেক প্রতিষ্ঠানের অফিস থাকলেও নেই স্টাইলিশ এবং অনেকের আরাধ্য পণ্য অ্যাপলের অফিস। এখন নয়, আগামীতেও অ্যাপলের অফিস এদেশে চালু হবে না বলে জানিয়েছেন প্রযুক্তিপণ্যের ব্যবসায়ী ও সংগঠনের নেতারা। দেশে অ্যাপল পণ্যের ছোট বাজার এবং ডেস্কটপ পাবলিশিংয়ে (ডিটিপি) অ্যাপল কম্পিউটারের চাহিদা পড়ে যাওয়া ‘অফিস না থাকা’র পেছনে একটা বড় কারণ বলে তারা মনে করেন।

দেশে বিশ্বখ্যাত তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান যেমন মাইক্রোসফট, আইবিএম, ডেল, এইচপি, স্যামসাং, হুয়াওয়ে, এরিকসন, নকিয়া, আসুস, লেনোভো, গিগাবাইট, তোশিবার অফিস রয়েছে। অবশ্য এরই মধ্যে দু’য়েকটি আন্তর্জাতিক অফিস তাদের কার্যালয় বাংলাদেশ থেকে গুটিয়ে নিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, অনেকে বাংলাদেশকে উদীয়মান মার্কেট হিসাব করে এখানে অফিস খুলে সরাসরি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তারা বাজার বোঝে, ক্রেতাদের চাহিদা, রুচি ইত্যাদি বুঝে মার্কেটের হাল ধরে এমডিএফ (মার্কেট ডেভেলপমেন্ট ফান্ড তথা বাজার উন্নয়ন তহবিল) কমিয়ে দিয়েছিল। এমডিএফ তহবিল কমিয়ে দেওয়ার পেছনে আরেকটা বড় কারণ ছিল এ দেশের প্রযুক্তিপণ্যের ব্যবসায়ীদের এই তহবিলের অপব্যবহার করা। এসব তথ্যও অ্যাপলের কানে পৌঁছেছে।

জানা গেছে, দেশে অ্যাপল পণ্যর বাজার ৫ শতাংশেরও কম। প্রকাশনা শিল্পে উইন্ডোজের গ্রহণযোগ্যতা বেড়ে গেলে অ্যাপল পিসির জনপ্রিয়তায় ধ্স নামে। অন্যদিকে ল্যাপটপ ও আইফোনের চাহিদা ব্যক্তি বিশেষের কাছে থাকলেও সর্বজন স্বীকৃত না হওয়ায় সেই মার্কেটও বাড়ছে না।

এদিকে উইকিপিডিয়া অ্যাপলের বিষয়ে বলছে, ২০১৬ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত বিশ্বের ১৭টি দেশে ৪৭৮টি রিটেইল স্টোর রয়েছে অ্যাপলের। আর ৩৯টি দেশে রয়েছে অ্যাপলের অনলাইন স্টোর।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি মোস্তাফা জব্বার  বলেন, অ্যাপল বাংলাদেশে কখনোই সরাসরি আসেনি। ডিস্ট্রিবিউটরশিপের মাধ্যমে বেশ অনেক বছর ধরে এদের উপস্থিতি এ দেশে। আইফোন ও ল্যাপটপ জনপ্রিয় হওয়ার আগে মূলত ডেস্কটপ পিসি (ম্যাক) ছিল চাহিদার শীর্ষে। পরে উইন্ডোজ
এসে যখন কমদামে ডেস্কটপ পাবলিশিংয়ের কাজে ভালো সাপোর্ট দিতে থাকলো তখন থেকেই ম্যাকের বাজার পড়তে থাকে। সেই সুদিন আর ফিরে আসেনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডিস্ট্রিবিউটরশিপ এখনও আছে, তবে দেশে অ্যাপলের অফিস চালুর কোনও সম্ভাবনা আমি দেখি না। আইফোন জনপ্রিয় হলেও দেশে কোনও অথরাইজড প্রতিষ্ঠান নেই। অথরাইজড প্রতিষ্ঠানের নামে যারা বিক্রি করছে তারা সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার ‘গ্রে’ মার্কেট থেকে কিনে এনে বিক্রি করছে। ফলে সরাসরি এসব পণ্যে অ্যাপল কোনও বিক্রির প্রভাব পাচ্ছে না। হয়তো এসব কারণেই অ্যাপল দেশে অফিস চালু করার কোনও প্রয়োজনীয়তা দেখছে না। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের হিসাব মতে, দেশে অ্যাপল পণ্যের বাজার মোট প্রযুক্তি পণ্যের ৫ শতাংশের বেশি নয়। তাহলে এই আকারের বাজারের প্রতি তাদের কেন আগ্রহ থাকবে?’

এদিকে দেশের কম্পিউটার ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিসিএস (বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি)–এর সভাপতি আলী আশফাক  জানান,‘‘অ্যাপলের বিজনেস মডেলটা ভিন্ন। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মতো নয়। তাছাড়া মার্কেট সাইজও ছোট। প্রতিষ্ঠানটি শপ অনুয়ায়ী পণ্য সরবরাহ করে থাকে, সেই অনুযায়ী পণ্য কিনতে হয়। ‘প্রোডাক্ট অ্যালোকেশন’ হয় সেইভাবে। ফলে সেই ‘অ্যালোকেশনে’র তালিকায় বাংলাদেশ নেই।’’

তিনি আরও জানান, ‘দেশে যে অ্যাপল পণ্য আসে তা সরাসরি আমদানি করা হয় না, আশেপাশের কোনও দেশ থেকে ‘অ্যালোকেশন’নিতে হয়। ফলে বাংলাদেশে অ্যাপল পণ্য বিক্রি হলেও সরাসরি কোনও পণ্য বিক্রির প্রভাব অ্যাপলে পড়ে না, যা পড়ে সংশ্লিষ্ট ওই দেশের বিক্রিতে। এ কারণেও অ্যাপল হয়তো সরাসরি বাংলাদেশকে নিয়ে ভাবছে না।

আলী আশফাক আরও জানান, আমরা জেনেছি অ্যাপল নতুন বছরে তাদের মোট পণ্য উৎপাদন পরিকল্পনা থেকে ১০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে। এর অর্থ হলো তাদের বাজার আর আগ্রাসী হারে বাড়ছে না। তাই তারা নতুন বাজার না খুঁজে যেসব বাজার চালু রয়েছে সেসব জায়াগায় আরও মনোযোগ বাড়াতে চেষ্টা করছে। এই অবস্থায় তারা আর নতুন করে অফিস চালুর কোনও পরিকল্পনা করবে কিনা সেটাই ভাবার বিষয়।

ঢাকায় রয়েছে অ্যাপল পণ্যের একাধিক শোরুম ও ডিস্ট্রিবিউটর। কিন্তু কেউই জানেন না ঢাকায় অ্যাপলের অফিস নেই কেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রযুক্তিপণ্য ব্যবসায়ী বলেন, অ্যাপলের আগামী দিনের যে ব্যবসায়িক গন্তব্য তাতে বাংলাদেশ নেই। তবে আগামীতে বাজার যদি বড় হয় তাহলে আইফোন ও ম্যাকবুক ক্রেতার সংখ্যা বাড়বে। আর সরকারি পর্যায়ে যদি অ্যাপল পণ্যের কেনাকাটা বাড়ে,তাহলে ভবিষ্যতে অ্যাপল এদেশের কথা ভাবলেও ভাবতে পারে।

এ জাতীয় আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2023 Mohajog