1. sardardhaka@yahoo.com : adminmoha : Sardar Dhaka
  2. nafij.moon@gmail.com : Nafij Moon : Nafij Moon
  3. rafiqul@mohajog.com : Rafiqul Islam : Rafiqul Islam
  4. sardar@mohajog.com : Shahjahan Sardar : Shahjahan Sardar
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:০৯ পূর্বাহ্ন

নীরব বিলুপ্তির পথে’ জিরাফ

মহাযুগ নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০১৭
  • ৩৬৭ বার

ফিচার ডেস্ক : তিন দশকের মধ্যে জিরাফের সংখ্যা ৩০ শতাংশ কমে যাওয়ায় স্তন্যপায়ী এ প্রাণী ‘নীরব বিলুপ্তির পথে’ এগিয়ে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা। এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক পরিবেশ সংরক্ষণ বিষয়ক সংস্থা- আইইউসিএন লম্বা গলার জিরাফকে ‘বিলুপ্তির ঝুকিতে’ থাকা প্রাণীর তালিকায় এনেছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

আইইউসিএন এর তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮৫ সালে সারা বিশ্বে জিরাফের সংখ্যা ছিল এক লাখ ৫৫ হাজারের মত, ২০১৫ সালে তা ৯৭ হাজারে নেমে এসেছে।

গেল ৩০ বছরে স্থলে থাকা সবচেয়ে লম্বা এ প্রাণীর সংখ্যা প্রায় এক তৃতীয়াংশ কমে যাওয়ার পেছনে খাদ্যভ্যাস ও বাস্তুভূমি পরিবর্তন, চোরা শিকারিদের হামলা এবং আফ্রিকার দেশে দেশে নাগরিক অসন্তোষ ও যুদ্ধ-বিগ্রহকে দায়ী করা হচ্ছে।

তবে মহাদেশটির কিছু কিছু জায়গা বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলে কয়েক প্রজাতির জিরাফের সংখ্যা খানিকটা বাড়ছে।

বিবিসি লিখেছে, আইইউসিএনের বার্ষিক প্রাণী সংরক্ষণ তালিকায় জিরাফের অবস্থান আগে ‘কম উদ্বেগজনক’ বলা হলেও সম্প্রতি প্রকাশিত তাদের ‘রেড লিস্টে’ জিরাফকে ‘বিলুপ্তির ঝুঁকিতে’ থাকা প্রাণীর তালিকায় রাখা হয়েছে।

আইইউসিএনের জিরাফ বিষয়ক দলের কো-চেয়ার জুলিয়ান ফেনেসি বলেন, হাতি ও গণ্ডার নিয়ে সবার কমবেশি উদ্বেগ থাকলেও লম্বা গলার জন্য ব্যাপকভাবে পরিচিত জিরাফের দিকে নজর ছিল না। সাফারি পার্কগুলোতে দেখা যায় সবখানেই জিরাফ আছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এ প্রাণীর সংখ্যা হু হু করে কমছে।

জনসংখ্যার ঊর্ধ্বগতির কারণে খামারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া এবং উন্নয়নের ধাক্কায় বন কমে যাওয়ায় আফ্রিকার বিভিন্ন স্থানে জিরাফের চারণক্ষেত্র কমে আসছে। মহাদেশটির বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ পরিস্থিতিও জিরাফকে হুমকিতে ফেলছে বলে ফেনেসির পর্যবেক্ষণ।

“যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকা, বিশেষ করে কেনিয়ার উত্তরাঞ্চল, সোমালিয়া এবং সাউথ সুদান ও ইথিওপিয়ার সীমান্ত এলাকায় জিরাফের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। স্বাভাবিক প্রয়োজনেই জিরাফের প্রচুর খাদ্য দরকার। বড়সড় ও কৌতুহলি এ প্রাণী যা খায়, তা দিয়ে একসঙ্গে অনেক মানুষকে খাওয়ানো সম্ভব।”

সাম্প্রতিক গবেষণায় জিরাফের প্রজাতির সংখ্যা চারটি বলা হলেও আইইউসিএনের লাল তালিকায় জিরাফকে এক প্রজাতির প্রাণী হিসেবেই বিবেচনা করা হয়েছে, যার উপ-প্রজাতি নয়টি।

এর মধ্যে পাঁচ উপপ্রজাতির জিরাফের সংখ্যা কমেছে, একটির অবস্থান স্থিতিশীল; আর বাকি তিনটির সংখ্যা উর্ধ্বমুখী বলে আইইউসিএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

প্রজাতিভেদে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে বসবাসের কারণে এমন ফলাফল এসেছে বলে জানান ড. জুলিয়ান।
“আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলে থাকা প্রজাতিগুলোর সংখ্যা গত তিন দশকে দুই-তিনগুণ বেড়েছে। অন্যদিকে উত্তর আফ্রিকারগুলো কমেছে, নুবিয়ান জিরাফের মত কোনো কোনোটা ৯৫ শতাংশও কমে গেছে।”

গবেষকরা অবশ্য বলছেন, জিরাফের কোনো কোনো প্রজাতি টিকে থাকতে না পারলেও দীর্ঘমেয়াদে এ প্রাণীটির পুরোপুরি বিলুপ্তির ঝুঁকি কম।

আইইউসিএনের লাল তালিকায় থাকায় জিরাফের বিষয়ে অন্যদেরও নজরদারি বাড়বে, যা প্রাণীটির টিকে থাকার জন‌্য সহায়ক হবে বলে মনে করছেন তারা।

“সঠিক সংরক্ষণ পদ্ধতির মাধ্যমে আমরা প্রাণীটির জঙ্গলে বেঁচে থাকা নিশ্চিত করতে পারি। সংরক্ষণের অসংখ্য সফলতার কথা আমরা জানি। জিরাফও তার একটি হতে পারবে বলে আমি মনে করি,” বলেন লন্ডন জুলজিকাল সোসাইটির ক্রিস র‌্যানসম।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইইউসিএনের সর্বশেষ লাল তালিকায় মোট ৮৫ হাজার প্রজাতি স্থান পেয়েছে, যার মধ্যে ২৪ হাজার প্রাণী আছে বিলুপ্তির ঝুঁকিতে।

সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল ইংগার অ্যান্ডারসন জানান, চিহ্নিত করার আগেই অনেক প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

“বিশ্বব্যাপী বিলুপ্তির সঙ্কটের মাত্রা যে আমাদের ধারণার চেয়েও বেশি, আইইউসিএনের এ সর্বশেষ লাল তালিকা তা প্রকাশ করেছে,” বলেন তিনি।

এবারের তালিকায় ৭০০ নতুন প্রজাতির পাখিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাদের ১১ শতাংশই বিলুপ্তির কিনারায় দাঁড়িয়ে।

এন্টিকুইয়া রেন নামের একটি পাখিকে তালিকায় ‘বিপন্ন’ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, কলম্বিয়ার প্রস্তাবিত একটি বাঁধ নির্মিত হলে আবাসস্থল হারিয়ে পাখিটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে।

বিভিন্ন দ্বীপে থাকা আক্রমণাত্মক প্রাণীর কারণে পাগান রিড-ওয়ার্বলার ও লায়জান হানিক্রিপারের মত অনেক পাখি ঝুঁকির মুখে পড়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে আইইউসিএনের তালিকায়।

আইইউসিএন এবারই প্রথম বণ্যপ্রাণী সংশ্লিষ্ট উদ্ভিদ ও ফসল যেমন আম, বার্লি ও বুনো ওট নিয়ে তাদের মূল্যায়ন দিয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এ জাতীয় আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2023 Mohajog