রাজধানীতে বাসে চলাচলকারী লোকজনের সুবিধার জন্য ‘সিটিং সার্ভিস’ বন্ধ করা হলেও সেটি আসলে তাদের কোনো উপকারে আসেনি। খবর অনুযায়ী, গত রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে ‘সিটিং সার্ভিস’ নামে চলাচলকারী প্রায় সব বাস-মিনিবাসই লোকাল বাসের মতো যত্রতত্র যাত্রী তুলেছে। তবে ভাড়া আদায় করেছে আগের মতোই। অতিরিক্ত যাত্রী তোলায় সৃষ্ট ভিড়ের কারণে বাসে বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন নারী, শিশুসহ অন্য যাত্রীরা।
গত শনিবার থেকে বাস-মিনিবাসের সিটিং, গেটলক ও স্পেশাল সার্ভিস ব্যবস্থা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় বাস-মিনিবাস মালিকদের সংগঠন ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতি। তাদের যুক্তি ছিল, মোটরযান আইনে সিটিং সার্ভিস বলে কিছু নেই। আর সিটিং সার্ভিস হওয়াতে আসনের অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হয় না, থামেও সীমিত কয়েকটি স্থানে। এর ফলে চাইলেও অনেক মানুষ বাসে উঠতে পারে না। লোকজনের চলাচলের সুবিধার্থেই তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাসমালিকেরা সরকার নির্ধারিত ভাড়া নেবেন বলেও সিদ্ধান্ত নেন। অথচ বাস্তবে ঘটল কিনা তার উল্টোটা।
সিটিং সার্ভিস বন্ধ হয়েছে কি না এবং সরকার নির্ধারিত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) রোববার রাজধানীর পাঁচটি স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসায়। কিন্তু এতে কাজ হয়েছে বলে মনে হয় না। যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আদালতের অভিযান এড়াতে রোববার প্রায় অর্ধেক বাস চলেনি। এতেই বোঝা যায়, বাসমালিকেরা আসলে যাত্রীদের সুবিধার জন্য নয়, বরং নিজেদের পকেট ভরতেই সিটিং সার্ভিস বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অতীতে দেখা গেছে, সিটিং সার্ভিসের নামে ভাড়া বৃদ্ধির পর তা লোকালে পরিণত করে বাড়তি ভাড়াই আদায় করেছেন মালিকেরা।
সিটিং সার্ভিস বন্ধের এই সিদ্ধান্ত সরকারকে আবার বাস-মিনিবাসের ভাড়া বৃদ্ধির চাপ দেওয়ার কৌশলও হতে পারে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা জরুরি হয়ে পড়েছে। পরিবহন খাতের নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা বন্ধ হোক। যাত্রীদের ভোগান্তি থেকে রেহাই দিন।