প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ক্ষমতায় থেকেও তিনি কিংবা তার পরিবার কখনও কোনো সুবিধা নেননি। বুধবার সংসদে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি বলেন, “আমরা ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া শিখিয়েছি। আমি ও আমার বোনের ৫টি ছেলে মেয়ে। তাদেরকে একটা বলে দিয়েছি- লেখাপড়া শিখেছ ওইটুকুই তোমাদের সম্পদ।
“তারাও প্রতিটি কাজে আমাদের সহায়তা করছে। কখনো বিরক্ত করে না, এই ব্যবসা দিতে হবে, সেই ব্যবসা দিতে হবে। এটা করতে হবে, ওটা করতে হবে। এই ধরনের বিরক্ত কখনোই তারা করেনি।”
নিজের সন্তানদের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা ও অটিজম নিয়ে কাজ করার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
“দেশের উন্নয়নমুলক অনেক কাজেই তারা সাহায্য করছে। ছোট বোনের মেয়ে টিউলিপ এই নিয়ে দুবার লন্ডনে এমপি নির্বাচিত হয়েছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “ক্ষমতা আমার কাছে ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য নয়। মানুষের কল্যাণের জন্য যে কোনো অবস্থা মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। আমি রাষ্ট্রপতির মেয়ে ছিলাম, মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে ছিলাম, নিজেও তিন বারের প্রধানমন্ত্রী। নিজের ভাগ্য কী করে গড়ব, সেই চিন্তা কখনও করিনি।”
জাতির জনকের হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে মেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি ও আমার ছোট বোন একদিনেই নিঃস্ব-রিক্ত হয়ে যাই। এই শোক ও ব্যথা সহ্য করা যায় না। তবে এই শোক ও আঘাত আমি ও আমার বোনের ভেতরে শক্তি জুগিয়েছে। মানুষের ভালোবাসার পরশ থেকে শক্তি পেয়েছি। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণকে জীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেছি।”
বঙ্গবন্ধু হত্যার পর বিদেশে থাকার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “পাঁচটি বছর রিফিউজি হিসেবে বিদেশের মাটিতে আমাদের থাকতে হয়েছে। রিফিউজি হিসেবে অন্য দেশে থাকা এটা যে কতটা বেদনাদায়ক ও কষ্টকর, আমরা তা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছি।
“একটি বৈরী পরিবেশে আমি দেশে ফিরে আসি। আমার চলার পথ কখনোই কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। কণ্টকাকীর্ণই ছিল। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত, চড়াই-উৎরাই ও বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে আমাকে এগুতে হয়েছিল।”
বারবার মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েও হাল না ছাড়ার কথা বলেন তিনি।
“একটা আত্মবিশ্বাস ছিল, আমি তো কোনো অন্যায় করিনি। এদেশের মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাকে সাহায্য করবে। দেশের মানুষও নিশ্চয় বুঝতে পারবে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়নের মহাসড়কে অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য জনগণকে এগিয়ে চলার শক্তি জোগাচ্ছে। উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় লাল-সবুজের নিশানা নিয়ে আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আজকের ১৬ কোটি জনগণের আস্থা ও সমর্থনের প্রতীকে পরিণত হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার।
“এরই ধারাবাহিকতায় নিশ্চিতভাবে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের আগেই উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশে পরিণত হবে।”
চীন হতে সাবমেরিন কেনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এটি বাংলাদেশের একটি জাতীয় স্বার্থকেন্দ্রিক সিদ্ধান্ত এবং এর ফলে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বহির্বিশ্বে কোনো নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে না বলে বিশ্বাস করি।”