৭ মার্চের ভাষণের স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কার্য স্থাপন, যাদুঘর প্রতিষ্ঠিা এবং ৭ই মার্চকে ঐতিহাসিক দিবস ঘোষণার নির্দেশনা চেয়ে সোমবার হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের কারা হয়েছে। তবে এব্যাপারে বিস্তারিত এখনো কোনো কিছু জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, গত অক্টোবরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ‘মেমরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ বা ‘বিশ্বের স্মৃতি’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। ৩০ অক্টোবর সোমবার প্যারিসে ইউনেস্কোর সদর দফতরে সংস্থাটির মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা এক বিজ্ঞপ্তিতে, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) দেয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্বালাময়ী ওই ভাষণটিকে ‘ডকুমেন্টারি হেরিটেজ’ (প্রামাণ্য ঐতিহ্য) হিসেবে ঘোষণা করেন।
জাতিসংঘের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইউনেস্কোর প্রোগ্রাম অফিসার আফসানা আইয়ুব বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘প্রতিবছর অডিও ও ভিজ্যুয়াল রেকর্ডের জন্য ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে বৈশ্বিক তালিকা করা হয়।
মূলত, মানবসভ্যতার সম্পদগুলো ধরে রাখতে প্রতিবছর আন্তর্জাতিকভাবে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিতে চলতি বছর ৭৮টি দেশের ঐতিহ্য স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের ৭ মার্চের ভাষণ অন্যতম।’ বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে সামরিক আইন প্রত্যাহার, জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, গোলাগুলি ও হত্যা বন্ধ করে সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেয়া এবং বিভিন্ন স্থানের হত্যাকাণ্ডের তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের দাবি জানান।
উইকিপিডিয়ার মতে, বঙ্গবন্ধুর প্রদত্ত ভাষণের একটি লিখিত ভাষ্য তখনই বিতরণ করা হয়েছিল। এটি তাজউদ্দীন আহমদ কর্তৃক কিছু পরিমার্জিত হয়েছিল। পরিমার্জনার মূল উদ্দেশ্য ছিল সামরিক আইন প্রত্যাহার এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবীটির ওপর গুরুত্ব আরোপ করা। পরবর্তীতে ১২টি ভাষায় ভাষণটি অনুবাদ করা হয়।
এছাড়া, এমন কালজয়ী ভাষণ প্রদান এবং দেশকে স্বাধীনতা এনে দিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করায় নিউজউইক ম্যাগাজিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘রাজনীতির কবি’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ১৮ মিনিট স্থায়ী এই ভাষণে তিনি পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদেরকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর জ্বালাময়ী সেই ভাষণে উদ্দীপ্ত ও অনুপ্রাণিত হয়েই বাঙালি জাতি ছিনিয়ে আনে স্বাধীনতা।