কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা মো. তারেক রহমানকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরিবারের দাবি, কোটা সংস্কার আন্দোলনে জড়িত থাকার জন্যই তাকে তুলে নেওয়া হয়েছে।
সোমবার সকালে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন মিলনাতনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারেকের বাবা আব্দুল লতিফ ও মা শাহানা বেগম তাদের ছেলে তারেক নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানান।
তারেকের পরিবারের সদস্যরা জানান, তারেকের বন্ধুরা জানিয়েছেন, গত শনিবার রাত আটটার দিকে তারেক ফকিরাপুলের একটি দোকানে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ব্যানার ও কিছু কাগজ প্রিন্ট করতে গিয়েছিলেন। তিনি যে দোকানে গিয়েছিলেন, তারা কাজ করতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপর থেকে তারেককে পাওয়া যাচ্ছে না, তার মুঠোফোন বন্ধ।
আব্দুল লতিফ বলেন, তারেক কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স মাষ্টার্স শেষ করে ঢাকায় কনফিডেন্স কোচিংয়ে পড়তো। চাকরির জন্য ন্যায্য দাবি নিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনে যোগ দেয় সে। তবে তাকে আমরা নিষেধ করেছিলাম। তারেক ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত রয়েছে। তিনি সরকারের কাছে ছেলের সন্ধান দাবি করেন।
আব্দুল লতিফ আরো জানান, ছাত্রজীবনে সে কুমিল্লা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিল। ঢাকায় থাকতো বাড্ডায় বোনের বাসায়। আমি তাকে বলতাম চাকরি এমনিতেই হবে আন্দোলন করা লাগবে না। সে আমাকে বুঝানোর চেষ্টা করতো। আমি বলতাম তোমার লেখাপড়া শেষ এখন ক্যাম্পাসের দিকে যাওয়ার দরকার নেই তবে মিছিল মিটিং করো। কথা শুনতো না।’
তারেকের বোন তানজিলা ইয়াসমিন বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার পর থেকেই তারেককে নানাভাবে হুমকি দেওয়া হয়। শনিবার বিকেল তিনটার দিকে তার সঙ্গে তারেকের সর্বশেষ কথা হয়। সন্ধ্যার পর বন্ধুদের মারফত তিনি জানতে পারেন, তারেক নিখোঁজ। তারেকের মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
অশ্রসিক্ত নয়নে মা শাহানা বেগম বলেন, আমার ছেলে কোন অন্যায় করেনি। তাকে কে বা কারা কেন নিয়ে যাবে। কেন নিখোঁজ থাকবে তার ছেলে। ছেলের ছবির ধরে কাঁদছিলেন তিনি। তাদের গ্রামের বাড়ি বগুড়ায়।
কোটা আন্দোলনের শুরু থেকেই তিনি যুক্ত ছিলেন। কোটা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের একজন যুগ্ম আহ্বায়ক তিনি।
ছেলের খোঁজ না পেয়ে রবিবার রাতে তারেকের মা মোছাম্মৎ শাহানা বেগম মতিঝিল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে যান। কিন্তু তারেকের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাস্থল ওই থানাধীন না হওয়ায় পরে তারা রাত সোয়া ১২টার দিকে শাহবাগ থানায় যান। থানা থেকে তাদের এক দিন অপেক্ষা করতে বলে তারিকের নাম–ঠিকানা লিখে রাখা হয়।
এ প্রসঙ্গে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, এ সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না। তবে তাদের থানায় জিডি বা মামলা করা হলে তারা বিষয়টি তদন্ত করবেন।