সংবিধানের ৩৫(৩) এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫২ ধারা মোতাবেক কারাগার কোনও উন্মুক্ত আদালত নয় বা হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের শহীদ শফিউর রহমান হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
গত ৪ সেপ্টেম্বর কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচার কাজ সম্পন্ন করতে পুরাতন ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্থায়ী আদালত স্থাপন করে গেজেট প্রকাশ করে সরকার। এরপর ৫ সেপ্টেম্বর (বুধবার) ওই আদালতে বিচার কাজও শুরু হয়।
একই সঙ্গে বুধবার ওই আদালত স্থাপনে জারি করা গেজেট বাতিল করতে আইন সচিবের কাছে খালেদা জিয়ার পক্ষে লিগ্যাল নোটিশও পাঠিয়েছেন তার আইনজীবীরা। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। এতে লিখিত বক্তব্যে জয়নুল আবেদীন বলেন, সংবিধানের আর্টিকেল ৩৫(৩) এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫২ ধারা মোতাবেক আদালত বলতে একটি উন্মুক্ত আদালতের কথা বলা হয়েছে।
‘যেখানে যে কোনো পাবলিকের সাধারণভাবে প্রবেশাধিকার থাকে। কিন্তু কারাগারের যে ৭ নম্বর কক্ষটিকে আদালত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে তা সংবিধানের ৩৫(৩) এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫২ ধারা মোতাবেক কোনো উন্মুক্ত আদালত নয় বা হতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘ওই আদালতে পাবলিক তো দূরের কথা খালেদা জিয়া ও অন্যান্য আসামিদের নিয়োজিত আইনজীবী, আসামিদের আত্মীয়-স্বজন কিংবা দলীয় নেত্রী হিসেবে খালেদা জিয়ার নেতা কর্মীদের প্রবেশ এবং আদালতের কার্যক্রম দেখা বা শ্রবণ করার কোনো সুযোগ নাই।’
জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘কারা অভ্যন্তরে গঠিত আদালতটি মোটেই উন্মুক্ত আদালত না হওয়ায় এবং সেখানে পাবলিক ট্রায়াল হওয়ার কোনো সুযোগ না থাকায় এরূপ বেআইনি আদালতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলার বিচার কার্যক্রম চলার আইনগত কোনো সুযোগ নেই।’
খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বর্ণনা দিয়ে জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। তার একটি হাত ও একটি পা কোনও কাজ করে না এবং প্রায় অবশ অবস্থায় তিনি দিন পার করছেন। তিনি আথরাইটিস রোগে আক্রান্ত। কিছুদিন আগে তিনি জেলখানায় মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন। তিনি ইউনাইটেড হসপিটালে তার চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেওয়ার দাবি জানালেও তাকে কোনও চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।’
সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- সমিতির সহসভাপতি গোলাম মোস্তফা ও গোলাম রহমান ভূঁইয়া, নিতাই রায় চৌধুরী, সানাউল্লাহ্ মিয়া, বদরুদ্দোজা বাদল, আমিরুল ইসলাম, গাজী কামরুল ইসলাম, একেএম এহসানুর রহমান, আহসান উল্লাহ, মেহেদী হাসানসহ আইনজীবীরা।