এশিয়া কাপ প্রায় শেষ। শুক্রবার এশিয়া কাপে নিজেদের তৃতীয় ফাইনাল খেলবে বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো কোনো শিরোপা জেতার সম্ভাবনা তাই আবার জাগছে।
আর শিরোপা যদি নাও জেতা হয়, মরুর বুক থেকে বাংলাদেশের প্রাপ্তি কিন্তু কম নয়। বিরুদ্ধ পরিবেশে মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে ৬টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা, টুর্নামেন্ট ফেবারিট পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনাল খেলা আর অবশ্যই মোস্তাফিজকে আবারও ফিরে পাওয়া।
ভুলে যাওয়ার মতো এক টেস্ট সিরিজ শেষে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন করেছিল বাংলাদেশ। সে প্রত্যাবর্তনেও আলাদা হয়ে ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৮ উইকেট পাওয়ার আগে ওয়ানডে সিরিজে ছিল ৫ উইকেট। উইকেটসংখ্যার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ছিল উইকেটপ্রাপ্তির সময়গুলো। অধিকাংশ দিনেই ম্যাচের মোড় ঘুড়িয়ে দিমোস্তাফিজের উইকেটপ্রাপ্তি। তখনই আশা জেগেছিল, সদ্য চোট কাটিয়ে ওঠা মোস্তাফিজ হয়তো ছন্দে ফিরছেন। য়েছিল আবারও বাংলাদেশের বোলিংয়ের ভরসা হয়ে উঠতে যাচ্ছেন।
রবিবারই আফগানের বিরুদ্ধে এশিয়া কাপের সেরা ওভার উপহার দিয়েছেন মোস্তাফিজ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাত্র ৭ রানের পুঁজি পেয়েছিলেন, প্রতিপক্ষের হাতে ছিল ৪ উইকেট। স্নায়ুর চাপের সেই কঠিন পরীক্ষা শেষে বিজয়ীর হাসি ছিল মোস্তাফিজেরই মুখে। মাত্র ৪ রান খরচায় একটি উইকেট আর বাংলাদেশের অবিস্মরণীয় এক জয়।
গতকাল পাকিস্তানের বিপক্ষেও মহাচাপ ছিল। আবুধাবির মাঠে এক বোলার কম নিয়ে নেমেছিল বাংলাদেশ। মূল বোলারদের ওপর দায়িত্ব ছিল প্রথমে উইকেট তুলে নিয়ে পাকিস্তানকে চাপে ফেলা। নিজের প্রথম ৯ বলেই সেটা সেরে ফেলেছেন মোস্তাফিজ, তাও দুবার।
২৪০ রানের লক্ষ্যে নামা পাকিস্তান তাই ১৮ রানেই হারিয়ে ফেলল তিন উইকেট। মোস্তাফিজ ও মিরাজের সৃষ্ট চাপের সুযোগ নিয়ে সৌম্য–মাহমুদউল্লাহ পঞ্চম বোলারের কাজটা শুধু ভাগাভাগিই করে নেননি; নিজেরাও উইকেট তুলে নিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
তবু পাকিস্তান জয়ের স্বপ্ন দেখছিল। শেষ ১০ ওভারে বল ও রানের পার্থক্য ২০–এর কমে নেমে আসছিল। স্লগ করতে ব্যস্ত পাকিস্তানের লেট অর্ডার ঝামেলা সৃষ্টি করার চেষ্টা চলছিল। আবারও মোস্তাফিজের আবির্ভাব। ৩ বলের মধ্যে হাসান আলী ও মোহাম্মদ নওয়াজকে ফিরিয়ে দিয়ে সে শঙ্কাও দূর করেছেন।
এর আগেই অবশ্য তৃতীয় উইকেট পাওয়া হয়ে যেত, যদি না লিটন উইকেটের পেছনে সহজ ক্যাচ ফেলতেন। প্রায় তিন বছর পর ওয়ানডেতে পাঁচ উইকেটপ্রাপ্তিও হয়নি শাহিন আফ্রিদির ক্যাচটা লিটন ফেলে দেওয়ায়। ফলে, একটা অতৃপ্তি নিয়েই মাঠ ছাড়তে হলো মোস্তাফিজকে।
অবশ্য ফাইনালে একটু অতৃপ্তি নিয়ে মোস্তাফিজের মাঠে নামাটাই হয়তো ভালো হবে!