পাঁচ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির চেয়ে স্কুলের দুর্নীতি দূর করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। রোববার দুদক কার্যালয়ে কমিশনের কৌশলপত্র-২০১৯ নিয়ে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, অনেকে প্রশ্ন তোলেন, দুদক পাঁচ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি দেখবে নাকি স্কুলের দুর্নীতি দেখবে। আমার কাছে মনে হয়, স্কুলটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটা জাতির ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে। এটা সবটাই যার যার দর্শনের ব্যাপার।
দুর্নীতিবাজদের লোভের জিহ্বা কেটে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, দুদককে ভয় পায় না, সমাজে এমন লোক কমই আছে। এটা আমরা করতে পেরেছি। ২০১৮ সালে ৬৩ শতাংশ মামলায় সাজা হয়েছে। যা আগের বছরে ছিল ৬৮ শতাংশ। এটাকে আমরা পজিটিভ হিসাবে দেখছি। দুর্নীতি কমে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, দুর্নীতি করে কারও পার পেয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমরা চাই একটি দুর্নীতিমুক্ত সমাজ উপহার দিতে।
দ্রুত বিচার প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ধরুন আমরা একটি মামলা দিলাম, ২০ বছর ধরে চললো। সেখানে আমাদের করার কিবা আছে। তবে দ্রুত সাক্ষী হাজির ও অন্যান্য বিষয়ে আমরা ভূমিকা রাখি। সাক্ষীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করি। দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হলে স্পেশাল কোর্ট প্রয়োজন। তবে সব কিছুর উর্ধ্বে হচ্ছে রাজনীতি, রাজনৈতিক অঙ্গীকার ছাড়া সম্ভব না। আশার কথা হচ্ছে, এবার নির্বাচনের পূর্বে সকল রাজনৈতিক দল দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছে।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। একটা সচেতনতা বৃদ্ধি হচ্ছে। তবে এটা এমন নয় যে একটা কল বসালাম সঙ্গে সঙ্গে পানি পাবো। আমেরিকান স্টাইলে জাম্প করে পরিবর্তন আসবে, এমনটা আশা করা ঠিক হবে না।
তিনি বলেন, মানুষ দুদকের উপর আস্থা রাখছে, এটা পজিটিভ। তবে কিছু ব্যর্থতাও রয়েছে। যে মাত্রায় দুর্নীতি কমার কথা, সে মাত্রায় দুর্নীতি কমেনি।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, সব দুর্নীতি আমাদের ম্যান্ডেট না। সরকারের অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। দুদকের মূলত সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের দুর্নীতি দেখার কথা। তবে আমরা সরকারকে সময়ে সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ দিতে পারি।
প্রসঙ্গত, সারাদেশ থেকে সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আলোচনায় অংশ নেন। তারা দুদকের কৌশলপত্র নিয়ে আলোচনা করেন। তারা জনসচেতনতা বৃদ্ধি, দুর্নীতি বিরোধী ক্লাব গঠনের সুপারিশ তুলে ধরেন।