গত দুই মাস ধরে পেঁয়াজ মানুষকে এতই ধোঁকা দিচ্ছে যে, ঘুরে ঘুরে এখন হয়রান ক্রেতারা। এই নিত্যপণ্যটির অতিমূল্য নিয়ে আর হা-হুতাশের শেষ নেই তাদের মধ্যে। অনেকটা অতি শোকে পাথর যেন।
যে পেঁয়াজ মাস দুয়েক আগে ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, সেটি যখন হঠাৎ ৬০-৭০ টাকা উঠে গেল, তখন বেশ হাহাকার দেখা গেছে বাজারে। এরপর দু-তিন দিনের ব্যবধানে ১০০, ১৫০ টাকার রেকর্ড ছাড়ালে সরকারি মহল নড়েচড়ে বসে। সেই দামও নিচে পড়ে যায় দ্রুতই। পেঁয়াজের কেজি উঠে যায় ২৮০-৩০০ টাকায়। তখন কি আর শোক করা চলে!
দোকানে গিয়ে এখন আর কেউ পেঁয়াজের কেজি কত জিজ্ঞেস করেন না। কোনো ধরনের দামদরও করেন না। ম্লান মুখে বরং বলেন, তিনটা পেঁয়াজ দাও। এরপর বিক্রেতার চাহিদামতো দাম দিয়ে চলে আসেন ক্রেতা।
সরকারের বিমানে পেঁয়াজ আনার উদ্যোগে কিছুটা আশা জেগেছিল ক্রেতার মনে। ২৮০ থেকে দাম নেমেছিল ১৮০-২০০ টাকায়। কিন্তু বিদেশ থেকে পেঁয়াজ উড়ে আসার পর কেজি আবার ২৫০ টাকায় উঠলে মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো ক্রেতাদের।
দাম নিয়ে টানা দুই মাসের অস্থিরতায় দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া সাধারণ ক্রেতারা পেঁয়াজ কেনায় লাগাম দিয়েছেন। আগে যেখানে সপ্তাহে চাহিদার দুই কেজি পেঁয়াজ কিনতেন, এখন তিনিই বাজার থেকে কিনছেন হাতে গোনা কয়েকটি পেঁয়াজ।
কারওয়ান বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা করে, আর মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা, চায়নার পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজি।
বেসরকারি চাকরিজীবী হামিদ রহমান এসেছেন পেঁয়াজ কিনতে। কয়েকটা দোকান ঘুরে একটিতে পেলেন। বলেন, ‘বাসায় খুব ঝামেলা হচ্ছে। মেয়ে বলছে নুডুলছেও ঠিকমতো পেঁয়াজ দেও না। কী করব বলেন, একটা ডিমের দাম ১০ টাকা, কিন্তু দুটি পেঁয়াজের দাম ৩০ টাকা। তাই পেঁয়াজ কম ব্যবহার করছি।’
বাণিজ্যমন্ত্র টিপু মুনশি রোববার সাংবাদিকদের জানান, পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক হতে আরো ১০ দিন সময় লাগবে। জাহাজে আমদানি করা পেঁয়াজ আগামী ১০ দিনের মধ্যে বাজারে আসবে। এছাড়া ডিসেম্বরের প্রথমেই বাজারে দেশি নতুন পেঁয়াজ আসতে শুরু করবে। সব মিলিয়ে আগামী ১০ দিনের মধ্যে পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক হবে।