1. sardardhaka@yahoo.com : adminmoha : Sardar Dhaka
  2. nafij.moon@gmail.com : Nafij Moon : Nafij Moon
  3. rafiqul@mohajog.com : Rafiqul Islam : Rafiqul Islam
  4. sardar@mohajog.com : Shahjahan Sardar : Shahjahan Sardar
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:০৬ পূর্বাহ্ন

স্বল্প সময় মঙ্গল গ্রহে যাওয়ার প্রস্তুতি

মহাযুগ নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৯
  • ৩২৬ বার

রকেটচালিত মহাকাশযানে চড়ে পৃথিবী থেকে মঙ্গল গ্রহে যেতে সময় লাগবে নয় মাস। এটি একজন অভিজ্ঞ নভোচারীর জন্যও বেশ দীর্ঘ সময়। সময়ের এই বাঁধার কারণে মঙ্গলগ্রহে মানুষ পাঠানোর কোন প্রকল্পই সেভাবে এগুতে পারছে না।

বিবিসি বাংলার খবরে বলা হয়েছে সময় কমিয়ে আনতে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসাসহ নানা প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীরা কাজ করছেন। প্রতিষ্ঠাগুলো এমন একটা প্রযুক্তি বের করার চেষ্টা করে যাতে অনেক কম সময়ে মঙ্গল গ্রহে পৌঁছানো যায়।

এর লক্ষ্য হলো পৃথিবী থেকে মঙ্গলে যাবার সময়টা তিন মাস বা তার নিচে নামিয়ে আনা। কিন্তু এত দ্রুতগামী রকেট বা মহাকাশযান কীভাবে তৈরি করা সম্ভব?

নাসার বিজ্ঞানীরা বলেন, সৌরশক্তি ব্যবহার করে মঙ্গলগ্রহে মানুষ পাঠানো আগে অন্যান্য সরঞ্জাম পাঠানো যেতে পারে। তবে এতে জ্বালানি কম লাগলেও সময় লাগবে অনেক বেশি – প্রায় দু-আড়াই বছর।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, দ্রুত মঙ্গলে পৌঁছানোর একটি উপায় হচ্ছে নিউক্লিয়ার থার্মাল ইলেকট্রিক প্রোপালশন – সোজা বাংলায় যাকে বলা যেতে পারে পরমাণু শক্তিচালিত রকেট ইঞ্জিন। আরেকটি উপায় হচ্ছে ইলেকট্রিক আয়ন প্রোপালশন – যাতে ব্যবহৃত হবে বিদ্যুৎশক্তি।

এসব প্রযুক্তি ব্যবহার করেই চলছে নতুন ধরণের নভোযান নির্মাণের চেষ্টা।

নিউক্লিয়ার থার্মাল ইলেকট্রিক প্রোপালশন

কিছু ইঞ্জিনিয়ার বলছেন, তাদের আইডিয়াটা হলো প্রথমে রাসায়নিক জ্বালানিচালিত রকেট দিয়ে পৃথিবীতে থেকে রকেট উৎক্ষেপণ হবে।

নভোচারীদের প্রথমে নিয়ে যাওয়া হবে ওরায়ন ক্যাপসুলে – যা বর্তমানে নির্মাণাধীন একটি পুর্ণব্যবহারযোগ্য নভোযান। এটি আগে থেকেই চাঁদের কক্ষপথে থাকা গেটওয়ে নামের একটি স্পেস স্টেশনের সাথে যুক্ত হবে। সেখান থেকে অন্য আরেকটি ট্রান্সফার ভেহিকলের সাথে যুক্ত হবে ওরায়ন, এবং নভোচারীরা রওনা দেবেন মঙ্গলের উদ্দেশ্যে। এই নভোযানটি হবে একটি পারমাণবিক বৈদ্যুতিক রকেট।

নভোচারীরা থাকবেন একটি ক্রু ক্যাপসুলে, সাথে থাকবে একটি ট্রান্সপোর্ট মডিউল। দুটিকেই মঙ্গলের কাছাকাছি পর্যন্ত নিয়ে যাবে এই পারমাণবিক বৈদ্যুতিক রকেট।

মঙ্গলের কক্ষপথে আগে থেকেই থাকবে আরেকটি প্রদক্ষিণরত নভোযান, যাতে থাকবে একটি ল্যান্ডার অর্থাৎ মঙ্গলের মাটিতে অবতরণকারী যান। তার সাথে ডকিং অর্থাৎ সংযুক্ত হবে পারমাণবিক বৈদ্যুতিক রকেট। তার পরই আসবে মঙ্গলের মাটিতে নভোচারীদের নামার পালা।

এখন এই যে এই পারমাণবিক বৈদ্যুতিক রকেট – তা চলবে কিভাবে?

এরোজেট রকেটডাইন প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক জো ক্যাসিডি বলেন, আমরা মনে করছি নিউক্লিয়ার থার্মাল প্রযুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যা দিয়ে দ্রুত মহাকাশ ভ্রমণ সম্ভব হতে পারে।

এ্যালাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেল টমাস এরকম একটি মহাকাশ রকেট ডিজাইনের কাজ করছেন। তিনি বলছেন, ‘ল্যাবরেটরি পরীক্ষা থেকে মনে হচ্ছে আমরা হয়তো মঙ্গলে যাত্রার সময়টা তিন মাসে কমিয়ে আনতে পারে। এটাও অনেক দীর্ঘ সময়, তবে রাসায়নিক জ্বালানিচালিত রকেটে যে সময় লাগবে, এটা তার মাত্র এক-তৃতীয়াংশ।’

অবশ্য এর অসুবিধা হলো বোয়িং কোম্পানি এ নিয়ে আগ্রহী নয়, কারণ তারা উদ্বিগ্ন যে পারমাণবিক রিঅ্যাক্টরওয়ালা মহাকাশযান নভোচারীদের ক্ষতি করতে পারে। তবে মি. টমাস এ ভয় অমূলক বলেই মনে করেন।

তার মতে আসল সমস্যা হলো এই প্রযুক্তি পৃথিবীতে পরীক্ষা করা কঠিন। তবে নাসা এ সমস্যার সমাধানের একটি উপায় নিয়ে এখন কাজ করছে।

ইলেকট্রিক আয়ন প্রোপালশন

মূল কথা হলো- বিদ্যুৎ ব্যবহার করে চার্জযুক্ত পরমাণু বা অণুতে দ্রুত গতির সঞ্চার করা – এবং তা থেকে বিপরীতমুখী থ্রাস্ট বা ধাক্কা তৈরি করা, যাতে রকেট সামনের দিকে এগুতে পারে।

এ প্রযুক্তি ইতিমধ্যেই মহাকাশে উপগ্রহ পরিচালনার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে – তবে এর গতি খুব দ্রুত নয়।

অ্যাড এ্যাস্ট্রা নামের একটি কোম্পানি এখন কাজ করছে ভাসিমার নামে একটি উচ্চগতিসম্পন্ন থ্রাস্টার তৈরি করার জন্য। তারা চাইছে, এর জন্য যে বিদ্যুৎ প্রয়োজন তা আসবে একটি পারমাণবিক রিএ্যাক্টর থেকে।

অ্যাড এ্যাস্ট্রার প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী ফ্র্যাংকলিন চ্যাং-ডিয়াজ বলেন, ‘দ্রুতগতির রকেট তৈরিই হচ্ছে সমাধান। একটি মহাকাশযান যার ওজন হবে ৪০০ থেকে ৬০০ মেট্রিকটন – তা যদি ২০০ মেগাওয়াট স্তরের বিদ্যুৎশক্তি পায় তাহলে ৩৯ দিনে আপনি মঙ্গলগ্রহে পৌঁছাতে পারবেন।’

তবে ডেল টমাস বলছেন, এটা এখনো ল্যাবরেটরি পর্যায়ে আছে, এবং এর বাস্তবায়ন এখনো অনেক দূরের কথা। তাছাড়া নতুন এসব প্রযুক্তি শুনতে আকর্ষণীয় লাগলেও লকহিড-মার্টিন বা বোয়িংয়ের মতো কোম্পানি এখনো তরল জ্বালানিনির্ভর রকেটকেই মহাকাশযাত্রার প্রধান ভিত্তি হিসেবে দেখতে চায়। তারা মনে করে এটি একটি পরীক্ষিত প্রযুক্তি – যা কার্যকর।

 

কবে নাগাদ মানুষ মঙ্গলগ্রহে যাবে?

নাসার সময়সূচি অনুযায়ী ২০৩৩ সাল নাগাদ মঙ্গলগ্রহে মানুষ পাঠানোর মিশন শুরু হতে পারে। তবে এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, আসলে এ মিশন শুরু হতে ২০৩৯ সাল পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।

 

এ জাতীয় আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2023 Mohajog