1. sardardhaka@yahoo.com : adminmoha : Sardar Dhaka
  2. nafij.moon@gmail.com : Nafij Moon : Nafij Moon
  3. rafiqul@mohajog.com : Rafiqul Islam : Rafiqul Islam
  4. sardar@mohajog.com : Shahjahan Sardar : Shahjahan Sardar
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৩১ পূর্বাহ্ন

শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর অবস্থানে আ.লীগ

মহাযুগ নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২০
  • ১৯৬ বার

দলের ভেতরে শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর অবস্থানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের হাই কমান্ড। এরই মধ্যে সিরাজগঞ্জ ও নরসিংদী জেলার শীর্ষ দুই পদের নেতাদের (সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক) দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের শৃঙ্খলা ফেরাতে ব্যর্থ হলে সামনের দিনে আরও কয়েকটি জেলার বিষয়েও একই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও দলটির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। নরসিংদী ও সিরাজগঞ্জ জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে স্বীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া নিয়ে আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতার সাথে কথা বললে তারা আলোকিত বাংলাদেশকে এসব কথা বলেন। সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মন্ত্রী, জেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ বিশ্বাস ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক বর্তমান সংসদ সদস্য ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্নাকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে এ সংক্রান্ত দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে সংগঠনের গঠনতন্ত্রের বিধি মোতাবেক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি আবদুল লতিফ বিশ্বাস ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক

ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্নাকে নিজ নিজ পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী কাউন্সিল না হওয়া পর্যন্ত জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট কেএম হোসেন আলী হাসানকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুস সামাদ তালুকদারকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হলো।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার নরসিংদী জেলা শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম হিরু ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন ভূঁইয়াকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় সংগঠনের গঠনতন্ত্র বিধি মোতাবেক আওয়ামী লীগের নরসিংদী জেলা শাখার সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম হিরু ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন ভূঁইয়াকে পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করেছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ। একই সঙ্গে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জিএম তালেবকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা কাজী মো. আলীকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব প্রদান করেছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। সারা দেশের তৃণমূলের কী অবস্থা সব খবর তিনি রাখেন। নিজেদের আধিপত্ত বিস্তার ও শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকা-ের মধ্যদিয়ে যারা সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করছেন, সংগঠনকে দুর্বল করছেন, তারা যদি সংশোধন না হন তাহলে তাদের বিষয়েও নরসিংদী ও সিরাজগঞ্জের মতো সিদ্ধান্ত অপেক্ষা করছে।

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নেত্রীর কাছে সবার আমলনামা জমা পড়েছে। বিশেষ করে সম্প্রতি হয়ে যাওয়া ৩১ জেলা কমিটির সম্মেলন ও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা নিয়ে নানা অভিযোগ এসেছে। এর বাইরে কাদের কারণে কোন কোন জেলা সম্মেলন হচ্ছে না এমন তালিকাও রয়েছে আওয়ামী লীগের হাই কমান্ডের কাছে। সুতরাং, কেউ যদি পদকুক্ষিগত করে রাখার জন্য দলের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করে বা দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজকে উৎসাহ দেয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও একই রকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঢাকা বিভাগ, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ এসব অঞ্চলের বিভিন্ন জেলা কমিটি নিয়ে কেন্দ্রের কাছে বেশকিছু অভিযোগ জমা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

এই বিষয়ে আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, দলের সর্বশেষ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক থেকে সারা দেশে আটটি সাংগঠনিক টিম করা হয়েছে। সম্মেলন ও পূর্ণাঙ্গ কমিটির কাজ তদারকি করার জন্য। যে দুই জেলা (নরসিংদী ও সিরাজগঞ্জ) সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, সেই বিভাগের টিমের সদস্যরা বেশ তৎপর বোঝা যাচ্ছে। সাংগঠনিক সক্ষমতা সন্তোষজনক হয়নি, তাছাড়া নির্বাচনের পদে এমপি বা অন্য পদ পাওয়ার পর তারা এককভাবে সব জায়গায় ক্ষমতার মালিক হতে চাচ্ছেন, সেই সব জায়গায় কিছু পরিবর্তন আনার চেষ্টা হচ্ছে। দুঃসময়ের কর্মীরা যেন বাদ না পড়ে, সবাইকে নিয়ে যেন কমিটি করা হয় সেই কাজের অংশ হিসেবেই এগুলো হচ্ছে। ভবিষ্যতের জেলা কমিটিগুলো শক্তিশালী হয়। জেলা শক্তিশালী না হলে উপজেলাও শক্তিশালী হয় না। দলকে সুসংগঠিত করার জন্য ও দলের শৃঙ্খলা আরও সুদৃঢ় করার জন্যই এসব পদক্ষেপ। সামনের দিনেও এমন পদক্ষেপ দেখা যাবে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা এমপি বা মন্ত্রী হয়ে দলের মধ্যে একক প্রভাব খাটাচ্ছে সেগুলো সামনের দিনে কমে যাবে।

এই প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের অন্যতম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, সংগঠনের শৃঙ্খলা রক্ষা করার দায়িত্ব রাজনৈতিক দলের। আর আওয়ামী লীগ একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাদের দায়িত্ব জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা ও অধিকারের বিষয়টি মাথায় রেখেই রাজনীতি করা। কেউ যদি এ আকাক্সক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়, দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তাকে দল থেকে বা তার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া খুবই স্বাভাবিক বিষয়। এটা সাংগঠনিক একটি প্রক্রিয়া। দলকে শক্তিশালী ও গতিশীল করার জন্যই এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়। আগামীতেও এই ধরনের পদক্ষেপ দেখা যেতে পারে।

এ জাতীয় আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2023 Mohajog