1. sardardhaka@yahoo.com : adminmoha : Sardar Dhaka
  2. nafij.moon@gmail.com : Nafij Moon : Nafij Moon
  3. rafiqul@mohajog.com : Rafiqul Islam : Rafiqul Islam
  4. sardar@mohajog.com : Shahjahan Sardar : Shahjahan Sardar
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৩২ পূর্বাহ্ন

হোতাদের খোঁজে র‌্যাব-পুলিশ

মহাযুগ নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২০
  • ২৮০ বার

গোল্ডেন মনিরের হোতা ও সহযোগীদের খুঁজছে র‌্যাব-পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গোল্ডেন মনিরের হোতা, সহযোগী ও তার কাছ থেকে সুবিধাভোগীদের নাম পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। র‌্যাব-পুলিশের অনুসন্ধ্যানেও অন্তত আরও চারজনের নাম উঠে এসেছে। এদিকে, গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে পৃথক তিন মামলায় মোট ১৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল রোববার অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের পৃথক দুই মামলায় সাত দিন করে মোট ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আবু বক্কর সিদ্দিক এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক মাসুদ উর রহমান। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। এসব তথ্যের ব্যাপারে অনুসন্ধান ও যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। চারটি সংস্থাকে বিস্তারিত তদন্ত করতে অনুরোধ জানাব। বিদেশে কী পরিমাণ সম্পদ আছে এবং কী পরিমাণ অর্থ পাচার করেছে সে বিষয়ে বিস্তারিত তদন্তের জন্য আমরা সিআইডিকে অনুরোধ জানাব। বিদেশ থেকে পাচার করে আনা অর্থের ব্যাপারে তদন্ত করতে আমরা এনবিআরকে অনুরোধ জানাব। দুদক ও বিআরটিএকেও র‌্যাব তদন্তের জন্য অনুরোধ জানাবে। এছাড়া গোল্ডেন মনিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তদন্তে

অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মামলাটি র‌্যাবে হস্তান্তরের জন্য আবেদন করা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত মামলাটি র‌্যাবে আনার ব্যাপারে ভাবা হয়নি। আসলে বিষয়টি নিয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, ৯০-এর দশকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লন্ডন ফেরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক সুরত মিয়া কাস্টমস কর্মকর্তাদের হাতে হত্যাকা-ের শিকার হন। এ ঘটনায় করা মামলায় অভিযুক্ত কাস্টমসের তিন কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়। এদের পক্ষে ওই মামলায় সাক্ষী হন রাজধানীর উত্তরখানের বাসিন্দা মো. শফিকুল। সূত্র জানায়, শফিকুলের সঙ্গে কাস্টমসের একটি অদৃশ্য চুক্তি হয়। তাদের পক্ষে আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার বিনিময়ে শফিকুলের সোনা চোরাচালানে চোখ রাখবে না কাস্টমস। এরপর অল্পদিনেই সোনা চোরাচালানে আন্তর্জাতিক চক্রের সদস্য হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরি করেন শফিকুল। তার নাম হয় ‘সোনা শফি’। তার সোনার কারবারে এক পর্যায়ে সহযোগীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন মনির। মনির ছাড়াও সোনা শফির সহযোগী আরও অন্তত তিনজন রয়েছে। তারাও শত শত কোটি টাকার মালিক। তাদের ব্যাপারে অনুসন্ধান করা হচ্ছে।

র‌্যাব-৩ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) বিনা রানী দাশ বলেন, অবৈধ অস্ত্র ও মাদক রাখায় গ্রেপ্তার গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। তাছাড়া ১০ দেশের মুদ্রা রাখায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে আরেকটি মামলা হয়েছে। মোট তিন মামলায় গ্রেপ্তার গোল্ডেন মনিরকে বাড্ডা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, মাদক, অস্ত্র ও কোটি টাকাসহ গ্রেপ্তার মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ২১ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিল পুলিশ। পৃথক তিন মামলায় মোট ১৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল রোববার অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের পৃথক দুই মামলায় ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আবু বক্কর সিদ্দিক এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক মাসুদ উর রহমান। এর আগে রোববার সকালে মনিরকে থানায় হস্তান্তর করে র‌্যাবের পক্ষ থেকে তিনটি মামলা করা হয়।

রোববার সকালে বাড্ডা থানার ওসি পারভেজ ইসলাম জানিয়েছিলেন, মনিরকে থানায় হস্তান্তর করে র‌্যাবের পক্ষ থেকে তিনটি মামলা করা হয়েছে। মাদক, অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাগুলো করা হয়েছে।

বিচারক জানান, অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের দুই মামলায় সাত দিন করে যে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে, তা একই সঙ্গে কার্যকর হবে। সেই হিসেবে তিন মামলায় আসামিকে মোট ১১ দিন রিমান্ডে থাকতে হবে।

এদিকে রোববার গাড়ি ও স্বর্ণ ব্যবসায়ী মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে করা পৃথক তিন মামলা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বাড্ডা থানার অস্ত্র, বিশেষ ক্ষমতা ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলা তিনটির এজাহার আদালতে পৌঁছালে ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক আবু বক্কর সিদ্দিক এ আদেশ দেন। বিচারক বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন ২৯ ডিসেম্বর এবং অস্ত্র আইনের মামলাটির প্রতিবেদন ১৩ ডিসেম্বর দাখিলের দিন ধার্য করেন। একই সঙ্গে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলাটি বিচারক মাসুদ উর রহমান আগামী ২১ ডিসেম্বর তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান মো. সাঈদ নূর আলম বলেছেন, গোল্ডেন মনিরের প্লট জালিয়াতি, ফাইল জালিয়াতি ও অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত করা হবে। এর পেছনে রাজউকের কারও সংশ্লিষ্টতা থাকলে, তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, অনিয়ম পাওয়া গেলে প্লটগুলো বাতিল করা হবে। এছাড়া রাজউকের দুর্নীতির অনিয়ম বন্ধ করতে শুদ্ধি অভিযান চালানো হবে বলে জানান তিনি।

গোল্ডেন মনিরের ২০০ প্লটের মালিক হওয়ার পেছনে রাজউকের কারও সহযোগিতা বা ইন্ধন ছিল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার ধারণা, এটা একদিনের প্রক্রিয়া নয়, এটা দীর্ঘদিনের প্রক্রিয়া। আমরা এতদিনে উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছি। গত বছর প্রথম উদঘাটন হয় এবং তখন থেকে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। এ ব্যবস্থা চলমান এবং যতক্ষণ না সর্বশেষ বিষয়টি উদঘাটিত হচ্ছে।

জানা গেছে, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গেও মনিরের সখ্য ছিল অন্যরকম। তিনি যে দামি গাড়িতে চড়তেন, সেটিও এক এমপির। এই গাড়ির নম্বর হলো- ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৫-৭০০৭। তার বাসায় আরেকটি গাড়ি পাওয়া যায়। সেটিও আরেক সাবেক এক এমপির। এই গাড়ির নাম্বার- ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৭-৪৪৪৪। গাড়ি দুটি মনির ও তার পরিবারের সদস্যরা ব্যবহার করতেন।

জানা গেছে, বাড্ডা পুনর্বাসন এলাকায় প্রায় ১৫ কাঠা সরকারি জমি মাত্র ১ হাজার এক টাকা মূল্যে নিজের করে নেন মনির। এরপর সেখানে তার বাবা কুখ্যাত রাজাকার সিরাজ মিয়ার নামে একটি বাণিজ্যিক স্কুল গড়ে তোলেন। অথচ ১৯৯১ সালের ১৭ আগস্ট সাবেক অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ বাড্ডা-খিলক্ষেতের ১৩৮৫.২৮ একর জমি অবমুক্ত করেন। এরপর থেকে বাড্ডা পুনর্বাসন এলাকায় একটি হাইস্কুল প্রতিষ্ঠার জন্য এলাকাবাসী দাবি করে আসছিলেন। অথচ কালো টাকার প্রভাবে মনির তার বাবার নামে স্কুল গড়ে তোলেন।

এ জাতীয় আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2023 Mohajog