1. sardardhaka@yahoo.com : adminmoha :
সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩, ১২:২০ অপরাহ্ন

রাজধানীর গুলশানে রেস্তোরাঁয় হামলা তদন্তে ৩ দেশের প্রযুক্তি সহায়তা নেবে-ডিএমপি কমিশনার

মহাযুগ নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১০ জুলাই, ২০১৬
  • ১৯৫ বার

মাসুদ হাসান রিদম,ঢাকা: গুলশানে হলি আর্টিসান বেকারি রেস্টুরেন্টে হামলা তদন্তে তিন দেশ থেকে প্রযুক্তি সহায়তা নেবে পুলিশ। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও সিঙ্গাপুর থেকে এ সহায়তা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। শনিবার গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে নিজ কার্যালয়ে ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় এ কথা জানান তিনি। ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘পুলিশের জঙ্গি দমনে প্রশিক্ষিত বিশেষ ইউনিট গুলশান হামলায় দায়ের করা মামলার তদন্ত করবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে ওই তিন রাষ্ট্রের সহায়তা নেয়া হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘মূলত গুলশান হামলায় ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া সব আলামত পরীক্ষা এবং নিহতদের মৃতদেহের রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য ওই তিন দেশের প্রযুক্তি সহায়তা নেয়া হবে।’কমিশনার বলেন, ‘গুলশানের এ হত্যা একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। সম্মিলিতভাবেই বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে হবে।’
ভবিষতে এ ধরনের হামলা প্রতিহত করতে ‘ওয়ে অব অ্যাকশন’ আর ‘মুড অব অ্যাকশন’ ঢেলে সাজানো হচ্ছে বলেও জানান আসাদুজ্জামান মিয়া।

চলমান ঈদের ছুটিতে সমস্ত ঢাকা শহর তথা মার্কেট, বিপণিবিতান, ব্যাংক, সোনার দোকানসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশী নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়। এছাড়া সড়কের গুরূত্বপূর্ণ পয়েন্টসমূহে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশী কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

এ পর্যন্ত ঢাকায় বড় ধরণের কোন চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই বা আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। শুধু তাই নয় এবারের ঈদে পুলিশ সদস্যদের ছুটি গ্রহণে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। জ

সম্প্রতি গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক হামলার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কমিশনার জানান, এটি আইনশৃংখলা বিষয়ক কোন ঘটনা নয়। এটি একটি জাতীয় সমস্যা। এ সমস্যা নতুন, আগে ছিল না। তারপরও পুলিশ খবর পেয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে প্রতিরোধ গড়ে তুলে এবং সারা রাত ঘটনাস্থল ঘিরে রেখে পাল্টা আক্রমণ করে হামলাকারীদের রেস্টুরেন্টের ভিতরে থাকতে বাধ্য করে। যার ফলশ্রুতিতে সম্মিলিত বাহিনীর সফল অভিযানের মধ্য দিয়ে ৩২ জন জিম্মিকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয় এবং হামলাকারীরা বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়।

 

পুলিশ কমিশনার আরো জানান, ভবিষ্যতে এধরণের কোন ঘটনা বাংলাদেশের মাটিতে যারা করবে তাদের ক্ষমা করা হবে না। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় জাতীয় ঐক্যমত্য দরকার। পুলিশের পক্ষ হতে কমিউনিটি ইনভলমেন্টের মাধ্যমে ইউনিভার্সিটি, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান ও এলাকায় সচেতনতামূলক কার্যক্রম চলছে। এ ব্যাপারে শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, মাদ্রাসার শিক্ষক, মসজিদের ইমামসহ বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষের দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করেন তিনি।

নগণের নিরাপত্তা যাতে কোনভাবে বিঘ্নিত না হয় সে ব্যাপারে পুলিশ সর্বসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।

গত ১ জুলাই রাতে গুলশানের কূটনীতিক পাড়ার অভিজাত এই রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জিম্মিকে হত্যা করে। সন্ত্রাসীদের ছোড়া গ্রেনেডে প্রাণ যায় ডিবির এসি রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ওসি সালাউদ্দিন খানের।

সন্ত্রাস মোকাবেলায় পুলিশের যা যা করা দরকার তা পুলিশ করবে। হামলা করে এদেশের আইনশৃংখলা বাহিনী বা এদেশের জনতাকে দমন করা যাবে না বলে সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্যে পরিষ্কার বার্তা দেন কমিশনার। তিনি প্রয়োজনে পুলিশের ট্রেনিং প্যাটার্ন, কর্মপদ্ধতি, মোড অফ অ্যাকশন-এ পরিবর্তন আনার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

সাম্প্রতিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিদেশী রাষ্ট্রের সহযোগিতা নেয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনার অত্যন্ত বিনয়ের সাথে বলেন, যদিও বর্তমান পরিস্থিতিটি নতুন, তবুও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বিশেষ করে ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ ও নবগঠিত কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটে একঝাঁক তরুণ প্রতিভাবান ও পেশাদার অফিসার রয়েছেন।

 

যাদের অনেকেরই দেশ বিদেশের উচ্চতর প্রশিক্ষণ রয়েছে। কাজেই এ মামলার তদন্তে তারা অত্যন্ত পারদর্শী। তবে প্রয়োজনে রাসায়নিক পরীক্ষা বা ল্যাব পরীক্ষার ক্ষেত্রে অতীতের মত বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র বা সংস্থার কারিগরি সহায়তা নেয়া হতে পারে।

এ ঘটনার ঠিক ৭ দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতের মাঠের কাছে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের ওপর বোমা হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য, গৃহবধূ ঝর্ণা রানী ও সন্ত্রাসী আবির নিহত হন। এছাড়া আহত হন আরো অন্তত ৮ জন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ৬ পুলিশ সদস্যকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) পাঠানো হয়।

সবশেষে, ঈদ উদযাপন শেষে নাগরিকদের নিরাপদ বাড়ি ফেরা নিশ্চিত করতে মেট্রোপলিটন পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে কমিশনার সকলকে আশ্বস্ত করেন।

এ জাতীয় আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 Mohajog