প্রতিটি দেশের নিজস্ব সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ খেলা। বাংলাদেশে প্রচলিত বহু গ্রামীণ-লোকজ খেলা রয়েছে। কিন্তু নগরায়ন, প্রযুক্তির প্রসারের ফলে সেগুলো থেকে ক্রমে দূরে সরে যাচ্ছে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম। শহরের শিশুরা অভ্যস্ত হচ্ছে কম্পিউটার, ট্যাব, মোবাইলে খেলায়। কৃত্রিম পার্কও তাদের অন্যতম গন্তব্য।
অথচ গ্রামের শিশুরা ছোটবেলা থেকেই বাড়ির এক চিলতে উঠান বা খোলা মাঠে তেমন কোনো উপকরণ ছাড়াই মেতে ওঠে গোল্লাছুট, নাটবল্টু, বউচির মতো বিভিন্ন মজার গ্রামীণ খেলায়। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে এসব খেলার প্রচুরতা আগের তুলনায় বেশ কম। বিলুপ্তপ্রায় গ্রামীণ খেলার প্রথম পর্বে থাকছে গোল্লাছুট-
গোল্লাছুট
বাড়ির বড় উঠান বা মাঠের এ খেলায় থাকে দুটো দল। যে দল প্রথমে খেলে তারা একপাশে গোলদাগ কেটে ভেতরে অবস্থান করে। একটি লাঠি মাটিতে পুঁতে, তাকে কেন্দ্র করে গোলদাগ কাটা হয়। গোল দাগের ভেতর থেকে ছুটতে হয় বলে খেলার নাম গোল্লাছুট।
ঢাকা, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, বরিশাল, খুলনা ও পাবনায় এ খেলার প্রচলন বেশি। খেলার নিয়ম হচ্ছে, দলের নেতা পুঁতে রাখা লাঠি ছুঁয়ে থাকবে। দলের সবাই একে অপরের হাত ধরে কেন্দ্র স্পর্শ করে ঘুরতে থাকবে। লক্ষ্য হচ্ছে, বৃত্তের বাইরে যে লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করা থাকে তা দৌড়ে স্পর্শ করা। কিন্তু দৌড়ে স্পর্শ করার আগেই বিপক্ষ দলের খেলুড়েরা যদি প্রথম দলের কোনো সদস্যকে স্পর্শ করে ফেলে তবে সে খেলা থেকে বাদ হয়ে যাবে। একে একে কোনো সদস্যই যদি লক্ষ্যে পৌঁছাতে না পারে তবে প্রতিপক্ষ দল শুরু করবে তাদের দান।