ঢাকা: ১ আগস্টের প্রথম প্রহরে অর্থাৎ রাত ১২টা ০১ মিনিটে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে শুরু হয়েছে শোকের মাস। শ্রাবণের বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে সব শ্রেণী পেশা সাধারণ মানুষের ৩২ নম্বরে একত্রিত হয়।
সবাই কালো ব্যাজ পরে ফুল ও মোমবাতি জ্বালিয়ে হাজারো বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের ধানমান্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে জড়ো হন।
শোকের মাস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মাসব্যাপী কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এদিন দলীয় নেতারকর্মীদের দেখা গেছে বিভিন্ন ধরনের ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আসতে। এখানে আসা বেশির ভাগ মানুষের হাতে ছিলো মোমবাতি ও ফুল। সবাই সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
এ সময় আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীদেরকে ‘বাংলাদেশের অপর নাম শেখ মজিবুর রহমান’, ‘১৫ আগস্টের রক্ত, বৃথা যেতে দেবো না এবং জঙ্গিদের আস্থানা ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও ’সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
মিরপুরের পল্লবী থানার থেকে আসা নারী নাছিমা আক্তার লাবু জানান, বঙ্গবন্ধুর আত্মার মাগফিরাত কামনার পাশাপাশি ভবিষতে যাতে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের মতো কাউকে নৃশংসভাবে হত্যার শিকার হতে না হয়। সেই জন্য এ শোকে অংশগ্রহণ করেছি।
রাজধানীর মুগদা থানার মান্ডা এলাকা থেকে আসা কিশোর রবিন খান রাজ বলেন, প্রতি বছর এ দিনে তিনি এখানে এসে বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের সবার আত্মার শান্তি কামনা করেন।
রাজধানীর তিতুমীর কলেজের ছাত্রলীগ নেতা বলেন, সংগঠনের কর্মসূচির সফল করতেই নির্ধারিত সময়ে এখানে এসেছেন তিনি। তিনি বলেন, আগস্ট মাস বাঙালি জাতির জন্য শোকের মাস। এ মাসে বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারে সবাইকে অন্যয়ভাবে হত্যা করা হয়েছে। তার যোগ্য সন্তান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও এ মাসে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতেই এ প্রোগামে অংশগ্রহণ করা হয়েছে।
এদিকে শোকের মাসকে ঘিরে ধানমন্ডিসহ রমনা জোনে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রমনা জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে একদল ক্ষমতাপিপাসু, বিপথগামী স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। এখানেই শেষ নয়, পঁচাত্তরের পর সামরিক সরকার ইনডেমনিটি বিল জারি করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ রাখে।
ঘাতকরা কালরাতে শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, ঘৃণ্য নরপশুরা একে একে হত্যা করেছে বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামালকে। জঘন্যতম এ হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচতে পারেনি বঙ্গবন্ধুর ভাই শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, ভাগ্নে যুবনেতা ও সাংবাদিক শেখ ফজলুল হক মণি, কর্নেল জামিলসহ আরও কয়েকজন।