বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মদিনে ‘শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণীয় : বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (৮ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন করবেন তিনি।
যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরীর সম্পাদনায় ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তর বইটি প্রকাশ করেছে। মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় ও নগর নেতাদের উপস্থিতি থাকবেন।
‘শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণীয় : বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব’ গ্রন্থটিতে বঙ্গমাতার জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরার প্রয়াস রয়েছে। মার্জিত ও রুচি সম্মত এ প্রকাশনাটির ১০৪ পৃষ্ঠার কলেবরে বঙ্গমাতাকে নিয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের স্মৃতিচারণায় সন্নিবেশিত হয়েছে শতাধিক সংবাদচিত্র, যার বেশিরভাগই দুর্লভ।
মুখবন্ধসহ নতুন-পুরোনো মিলিয়ে ১০টি রচনা রয়েছে স্মারক গ্রন্থটিতে। বঙ্গমাতাকে বহুকৌণিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মূল্যায়ন করার প্রয়াস রয়েছে এসব লেখায়। একইসঙ্গে রয়েছে একান্ত পারিবারিক নানা মুহূর্তের কথা। জাতির পিতার পরিবারের বহু অজানা তথ্যের পাশাপাশি তৎকালীন রাজনৈতিক পরিবেশ পরিস্থিতিরও একটি নির্ভরযোগ্য তথ্যবহুল চিত্র এই রচনাগুলোতে উঠে এসেছে।
বেগম ফজিলাতুন নেছা রেনু ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট ফরিদপুর জেলার টুঙ্গিপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পর্যন্ত দীর্ঘ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তিনি ছিলেন যেন এক আত্মা। বাংলাদেশের ইতিহাসের পলাবদলের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাপ্রবাহে তাৎপর্যময় ভূমিকা রেখেছেন বেগম মুজিব। কখনো প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছেন, কখনো পরোক্ষভাবে উপদেশ, পরামর্শ, নানা ধরনের সহযোগিতা-সমর্থনে যুক্ত থেকেছেন সমকালীন ঘটনাপরম্পরার সঙ্গে। বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য তিনি উৎসর্গ করেছিলেন নিজের স্বামীকেও। কিন্তু ইতিহাসের পাদপ্রদীপের আলোয় সেভাবে উদ্ভাসিত হননি তিনি। চিরকাল নেপথ্যেই থেকে গেছেন। নীরবে-নিভৃতে কাজ করে গেছেন কোনো পুরস্কার, কোনো স্বীকৃতির প্রত্যাশা না করে। এই মহিয়সী নারীর যাপিত জীবনের নানা অজানা দিক তুলে ধরার চেষ্টা রয়েছে বইটিতে।
স্নেহময়ী মায়ের স্মৃতিচারণা করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। পূর্বে প্রকাশিত এ দুটি লেখাই সংকলিত। বঙ্গমাতার নেপথ্যচারী জীবনের মূল্যায়ন করে একটি তথ্যবহুল লেখা লিখেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী। শিক্ষাবিদ ড. নীলিমা ইব্রাহিমের লেখাটিতে পাওয়া যাবে অনেক চমকপ্রদ অজানা তথ্য। সাংবাদিক ও সাহিত্যিক বেবী মওদুদ লিখেছেন বঙ্গবন্ধুর জীবনে কত গভীর ছিল তাঁর স্ত্রীর ভূমিকা সেই প্রসঙ্গে। বঙ্গমাতার অবদানের মূল্যায়ন রয়েছে প্রবীণ সাংবাদিক এবিএম মূসার লেখায়। মমতাজ লতিফ লিখেছেন বঙ্গবন্ধুর বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠার নেপথ্যে বেগম মুজিবের ত্যাগ ও প্রেরণা প্রসঙ্গে। মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গমাতার ভূমিকার বিষয়টি উঠে এসেছে আমিনুল হক বাদশার লেখায়।
এ ছাড়া ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে বঙ্গবন্ধু সহধর্মিনীর যে স্মৃতিচারণা করেছেন এবং যেভাবে তাঁর মূল্যায়ন করেছেন, সেই অংশগুলো একসঙ্গে এনে সাজিয়ে দেওয়া হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণায় বঙ্গমাতা’ শিরোনামে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের ৯৭টি ছবি সংযোজিত হয়েছে ‘শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণীয় : বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব’ গ্রন্থটিতে। এর মধ্যে অনেক ছবিই অত্যন্ত দুর্লভ, যা হয়তো অনেকেই আগে দেখেননি। কিছু আলোকচিত্র বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর থেকে সংগৃহীত।
মহানগর যুবলীগ উত্তরের সভাপতি মাইনুল হোসেন খান নিখিল ও সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন গ্রন্থটির প্রকাশক। এছাড়া সুসজ্জিত মোড়কে সচিত্র গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে জয়ীতা প্রকাশনী। পরিকল্পনা ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন জয়ীতা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ইয়াসিন কবির জয়। প্রচ্ছদ ও অঙ্গপরিকল্পনা করেছেন শাহরিয়ার খান বর্ণ।