রাজধানী মধ্যাঞ্চলের নান্দনিক সৌন্দর্যের স্থাপনা হাতিরঝিলে বিশ্বখ্যাত সিডনি অপেরা হাউসের আদলে উন্মুক্ত মঞ্চ তৈরির কাজ শেষ হচ্ছে শিগগিরিই। এই অপেরা হাউসে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের অপেরা হাউসের মতোই মনোমুগ্ধকর বিনোদন আর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন দর্শকরা।
সোমবার হাতিরঝিলে গিয়ে দেখা যায়, উন্মুক্ত মঞ্চটিতে তিনটি আলাদা গ্যালারি রাখা হয়েছে, যার মধ্যে একটির কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে। বাকি দুটির কাজ শেষের পথে। মঞ্চটি তৈরিতে পুরোদমে কাজ করছেন শ্রমিকরা। যদিও মঞ্চটি আগেই তৈরি করা হয়েছিল। এখন চলছে টাউলস বসানোর কাজ। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কোর এই অপেরা হাউসের অবকাঠামো নির্মাণ করছে বলে জানা গেছে।
প্রকল্পটির কাজের তদারকি করছেন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা সাহাদত হোসেন। তিনি জানান, চীন থেকে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আমদানি করা হয়েছে। এখন চলছে সংস্থাপনের কাজ। পুরো গ্যালারিটা তৈরি করা হবে স্টিল দিয়ে। এজন্য কাজ শেষ করতে খুব বেশি সময় লাগবে না।
জানা গেছে, হাতিরঝিলে এ প্রকল্পটি ১০ একর জায়গার ওপর নির্মিত হচ্ছে। এটি বাস্তবায়নের জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় যৌথভাবে কাজ করছে। এখানে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে।
ছাদখোলা মুক্তমঞ্চের কাছেই ১০তলা অত্যাধুনিক গাড়ি পার্কিং ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এ ভবনে গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধা ছাড়াও একটি সম্মেলন কক্ষ থাকবে। এতে থাকবে হাতিরঝিলের ইতিহাস সংক্রান্ত জাদুঘর, রেস্টুরেন্ট ও অন্যান্য সুবিধা। শুধু তাই নয়, হাতিরঝিলে ভাসমান রেস্টুরেন্টও করা হবে এবং ব্যাটারিচালিত ওয়াটার স্কুটার চালু হবে শিগগিরই। আবার পাল তোলা নৌকাও চলবে হাতিরঝিলে।
সূত্র জানায়, ৯ দশমিক ৪৭৭ একর জমির ওপর নির্মিত হবে হাতিরঝিল সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। প্রায় ৪ লাখ বর্গফুট জায়গার ওপর এ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রণয়নের জন্য ইতোমধ্যে একাধিক দেশি-বিদেশি স্থপতি কাজ করছেন। এতে ৩ থেকে ৫ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন মূল মিলনায়তন থাকবে।
এছাড়াও আরও দুটি মিনি মিলনায়তন থাকবে। যে দুটির ধারণ ক্ষমতা হবে ৩০০ থেকে ৫০০ দর্শকের। ঝড়বৃষ্টি বা রোদ থেকে রক্ষার জন্য উন্মুক্ত মঞ্চের ওপরে অবশ্য ছাউনিও থাকবে। যার ফলে সারা বছর দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই এখানে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
প্রকল্প এলাকায় থাকবে একটি বিশেষ (সুভিনিয়র) শপ। যেখানে বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক ঐতিহ্য প্রদর্শনীর জন্য তুলে ধরা হবে। এখানে সমকালীন বিভিন্ন চলচ্চিত্র প্রদর্শনেরও ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া নতুন শিল্পীদের জন্য প্রশিক্ষণ একাডেমিও গড়ে তোলা হবে হাতিরঝিল সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে।