দলের নেতা-কর্মীদের বর্তমান অবস্থা বর্ণনা করার সময় কেঁদে ফেললেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘৩০টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল’ বন্ধের প্রতিবাদ জানাতে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (অ্যাব) আলোচনা সভায় বক্তব্য দেওয়ার একপর্যায়ে কেঁদে ফেলেন ফখরুল।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রতিদিন ক্রসফায়ার, একটা, দুটা, তিনটা, চারটা চলছে। যতজনকে সন্দেহজনকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, একটা লোক বেঁচে আছে? সবাইকে ক্রসফায়ার, গান ব্যাটলের অদ্ভুত সব গল্প, অলীক গল্প তৈরি করে তাদের মেরে ফেলা হয়েছে। সিগন্যালে থামে গাড়ি, হকার ছেলেপেলে, ইয়াং ছেলেপেলে সব আসে। দেখে বলে যে স্যার, আমি বিএনপি করতাম লক্ষ্মীপুরে। এত মামলা, পালিয়ে চলে এসেছি। এখন হকারি করছি। রিকশা চালায় আমাদের ছেলেপেলে।’
এরপরেই গলা ধরে আসে মির্জা ফখরুলের। একপর্যায়ে কেঁদে ফেলেন তিনি। বলেন, ‘এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আমরা আছি। গুম করে দেয়, খুঁজে পাওয়া যায় না। বাচ্চাগুলো এখানে দাঁড়িয়ে বলল আপনাদের সামনেই।’ পরে নিজেকে সামলে নিয়ে ফখরুল লেন, ‘আমি দুঃখিত। দেখতে দেখতে আমি খুব আবেগপ্রবণ হয়ে গেছি।’
বিএনপির মহাসচিব মির্জা আলমগীর আরও বলেন, ‘ক্ষমতাসীনদের অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। তাদের অত্যাচার সইতে না পেরে গ্রামাঞ্চলে বসবাসরত বিএনপির সমর্থকদের অনেকেই এখন ঢাকায় হকারের কাজ করছে।’
ক্ষমতায় টিকে থাকতে নতুন নতুন আইন করা হচ্ছে মন্তব্য করে মির্জা আলমগীর বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে পুরোপুরি স্বৈরতান্ত্রিক একদলীয় শাসন বাস্তবায়নে ফ্যাসিস্টে পরিণত হয়েছে সরকার। ফলে এখন নতুন নতুন আইন করা হচ্ছে। যে আইনে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এক কোটি টাকা জরিমানা করার বিধান গৃহীত হওয়ার পথে। কাজেই এ থেকে আমাদের মুক্ত হতে হবে। কারণ, এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না।’
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেছেন, দেশে কোনো গুম খুন কিংবা হত্যাকাণ্ডেরই বিচার হচ্ছে না। বরং তদন্তের আগেই বন্দুকযুদ্ধের নাটক সাজিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মেরে ফেলা হচ্ছে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সরকারের স্বার্থ রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।