অনির্দিষ্টকালের নৌযান ধর্মঘটের তৃতীয় দিনেও বাগেরহাটের মংলা বন্দরে ১২টি দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য বোঝাই-খালাস ও পরিবহন সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। পণ্য ও যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় মংলা বন্দরের সঙ্গে সারাদেশের নৌ যোগাযোগও বন্ধ হয়ে গেছে।
নৌ-শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের ডাকা ধর্মঘটের কারণে লাইটারেজ জাহাজ না পাওয়ায় বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনেও মংলা বন্দরে জাহাজের পণ্য খালাসে শ্রমিক নিয়োগ দেয়া যায়নি। মংলা বন্দর চ্যানেলে পণ্য খালাসের অপেক্ষায় অলস পড়ে রয়েছে এসব বিদেশি জাহাজগুলো। বেকার হয়ে পড়েছে বন্দরের শ্রমিক-কর্মচারীরা।
নৌযান শ্রমিকরা মংলার পশুর, শরণখোলার বলেশ্বর ও মোড়েলগঞ্জের পানগুছি নদীতে নোঙর করে রেখেছে কয়েকশ কার্গো, কোস্টার, বার্জসহ লাইটারেজ জাহাজ। ফলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন মংলা বন্দর ব্যবহারকারী, আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা। ধর্মঘটের কারণে পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকায় মংলা বন্দরের শিল্প এলাকার বিভিন্ন কল-কারখানার উৎপাদন ব্যাহতের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সারাদেশে প্রায় সাড়ে ১৯ হাজার নৌযানের দুই লাখ নৌ-শ্রমিক তাদের সর্বনিম্ন বেতন ১০ হাজার টাকায়, কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ, নদীর নাব্যতা রক্ষা ও নৌপথে সন্ত্রাসী-ডাকাতি বন্ধসহ ১৫ দফা দাবিতে মঙ্গলবার রাত ১২টা ১মিনিট থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের এ ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছেন নৌযান শ্রমিকেরা।
নৌ-শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক ওয়েজুল ইসলাম বুলবুল জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত নৌযান শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের এই কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।
মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী ব্যবস্থাপক (ট্রফিক) মোহাম্মদ সোহাগ জানান, নৌযান শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের নৌযান ধর্মঘটে তৃতীয় দিনেও মংলা বন্দরে অবস্থানরত গম, সার, ক্লিংকার, পাথর, মেশিনারীসহ ১২টি বাণিজ্যিক জাহাজে পণ্য বোঝাই-খালাস ও পরিবহন কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে।
ধর্মঘট অব্যাহত থাকলে মংলা বন্দরে জাহাজ জট বাড়ার পাশাপাশি বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে বন্দর ব্যবহারকারী ও আমদানিকারকরা।