জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ও চলচ্চিত্রকার হুমায়ূন আহমেদ। যারা তার অমর সৃষ্টি চরিত্র মিসির আলী ভক্ত তাদের কাছে খুব প্রিয় উপন্যাস ‘দেবী’। এই উপন্যাস অবলম্বনে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য চলতি বছরে সরকারি অনুদান পেয়েছেন অভিনেত্রী জয়া আহসান।
কিন্তু এদিকে ‘দেবী’র গল্প চুরি করে চলচ্চিত্র নির্মাণ করে শিল্পচর্চাকে প্রশ্নবিদ্ধ করলেন ভারতের এক নির্মাতা। কলকাতার নির্মাতা শেখর দাস নির্মাণ করেছেন ‘ইপিএস- একটি রহস্য গল্প’ নামের চলচ্চিত্র। গত ২১ আগস্ট রাত ৯টায় ভারতীয় বাংলা চ্যানেল জি-বাংলায় ছবিটির প্রিমিয়ার হয়। আর তখনই হুমায়ূন ভক্ত-পাঠকদের কাছে বিষয়টি হাতে-নাতে ধরা পড়ে। তারা এই ছবিটির গল্পের ‘দেবী’র মিল খুঁজে পান। মিল শুধু মিল নয়। গল্প, বিষয় এবং চরিত্র সবই এক। ছবিতে ‘দেবী’ উপন্যাসের রানু চরিত্রে পাওয়া গেছে ঋতুপর্ণা, আনিস চরিত্রে সাহেব চ্যাটার্জি, নীলু চরিত্রে রাইমা সেনকে। এবং মিসির আলি চরিত্রটি দেখানো হয়েছে প্রফেসর হিসেবে। কিন্তু ছবিটির কোথাও হুমায়ূন আহমেদের নাম ব্যবহার করা হয়নি। গল্পকার হিসেবে পর্দায় নাম ভেসেছে অখ্যাত শিবাশিস রায়ের!
আর এতেই চটেছেন দুই বাংলার হুমায়ূন ভক্তরা। সবাই একটি অতি জনপ্রিয় উপন্যাসের গল্প চুরি করে ছবি নির্মাণের জন্য শেখর দাসের সততা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
বলা বাহুল্য, বাংলাদেশের মতো কলকাতাতেও হুমায়ূন আহমেদ তুমুল জনপ্রিয় লেখক। সেখানেও রয়েছে তার প্রচুর ভ্ক্ত ও বইয়ের পাঠক। তারা এই ছবিটি জি-বাংলাতে প্রচার না করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে সোচ্চার হয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে।
তবে এখন পর্যন্ত জি-বাংলা ও ছবিটির সংশ্লিষ্টদের কারো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন। এই অভিনেত্রী ও নির্মাতা বলেন, ‘আমি (শনিবার) কাল রাত থেকেই এই বিষয়টি শুনছিলাম। পরে ছবিটি দেখেছি। একদম ‘দেবী’ উপন্যাসের কাট টু কাট। কিছু নাম শুধু পাল্টেছে। আর রাইমা সেনের চরিত্রটি একটু বদল করেছে। বাদ বাকি এ টু জেড নকল। আমি নকল বলবো, এটা চুরি।’
তিনি আরো বলেন, ‘এটা খুবই অন্যায়। শিল্পচর্চার ক্ষেত্রে এমন জালিয়াতি কেউ প্রত্যাশা করে না। আমি নাটকের শুটিং নিয়ে ব্যস্ত আছি। ঝামেলা শেষ করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেব। যে কেউ চাইলে অন্যের গল্প নিয়ে ছবি বানাতেই পারেন। তার জন্য অনুমতি লাগে। সেটা যদি নাও নেয়া যায়, পর্দায় নামটা অন্তত উল্লেখ করতে পারতেন। অথচ এখানে অন্যের গল্প এরা বুক ফুলিয়ে নিজেদের বলে চালিয়ে দিয়েছে। এই ছবি অবশ্যই বন্ধ করতে হবে জি-বাংলাকে।