রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিসার (১৪) সন্দেহভাজন খুনি ওবায়দুলকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পুলিশ। এই অঙ্গীকার করে পুলিশ আপাতত রাজপথে আন্দোলন না করতে শিক্ষার্থীদের অনুরোধ জানিয়েছে। শিক্ষার্থীরা তা মেনে নিয়েছে।
আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে স্কুলের শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মোড় অবরোধ করে রিসার হত্যাকারীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। রাজধানীর ব্যস্ততম এই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করায় আশপাশের সড়কগুলোতে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। বেলা সোয়া দুইটার দিকে শিক্ষার্থীরা কাল দুপুর ১২ পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করে। এ সময়ের মধ্যে খুনি গ্রেপ্তার না হলে আবার আন্দোলন শুরু হবে।
বেলা দেড়টার দিকে রমনা বিভাগের পুলিশের সহকারী কমিশনার শিবলী নোমান ঘটনাস্থলে আসেন। শিক্ষার্থীদের তিনি সড়কে আন্দোলন না করার আহ্বান জানান। শিবলী নোমান বলেন, তাঁদের কাছে কেবল খুনি ওবায়দুলের নাম ছিল। এখন তাঁর স্থায়ী ও অস্থায়ী ঠিকানা, ছবি পাওয়া গেছে। তাঁকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি সময়ের ব্যাপার মাত্র। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিকে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানান।
বেলা দুইটার দিকে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। সেখানে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলনই করুক না কেন, গণজাগরণ মঞ্চ সেই আন্দোলনে কর্মী হিসেবে পাশে থাকবে।
আজ সোমবার সকালে স্কুলের মিলনায়তনে রিসার মৃত্যুতে শোকসভা হয়। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা বক্তব্য দেন। তাঁরা হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করার ও শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান। শোকসভায় এসে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘হত্যাকারীর ফাঁসির দাবি করছি।’ শোকসভায় রিসার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ছয় দিন আগে, গত বুধবার খালাতো ভাইয়ের সঙ্গে স্কুলের সামনের পদচারী-সেতু পেরিয়ে নিচে নামছিল রিসা। সেখানেই স্কুলের পোশাক পরা রিসাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। তারপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে। গতকাল রোববার রিসা মারা যায়।
মাস ছয়েক আগে স্কুলের ড্রেস বানাতে মায়ের সঙ্গে দরজির কাছে গিয়েছিল রিসা। সেই দরজি ফোন নম্বর পেয়ে তাকে উত্ত্যক্ত করত এবং পিছু নিত। মৃত্যুর আগে রিসা বলে গেছে, ওই দরজি ওবায়দুলই ছুরি মেরেছে তাকে। পুলিশকেও সে এই জবানবন্দি দিয়েছে।
পুলিশ জানায়, রিসা গত বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে জবানবন্দিতে বলেছে, বখাটে ওবায়দুল তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করেছে। হামলার আগের দিনও সে তার পিছু নিয়েছিল।