1. sardardhaka@yahoo.com : adminmoha : Sardar Dhaka
  2. nafij.moon@gmail.com : Nafij Moon : Nafij Moon
  3. rafiqul@mohajog.com : Rafiqul Islam : Rafiqul Islam
  4. sardar@mohajog.com : Shahjahan Sardar : Shahjahan Sardar
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন

সার কারখানার দুর্ঘটনায় দুই কর্মকর্তা দায়ী

মহাযুগ নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৬
  • ২৫৭ বার

চট্টগ্রামে সার কারখানায় দুর্ঘটনার জন্য সরাসরি দুই কর্মকর্তাকে দায়ী করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদনে। তাঁদের প্রত্যাহার করে বিভাগীয় শাস্তি ও তাঁদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের সুপারিশ করেছে কমিটি। এ ছাড়া ট্যাংকের নিরাপত্তার জন্য পাঁচ ধরনের সুরক্ষা যন্ত্র নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

২২ আগস্ট রাতে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার রাঙাদিয়া গ্রামে অবস্থিত ডিএপি-১ সার কারখানার অ্যামোনিয়া গ্যাসের ট্যাংকে দুর্ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। আজ বুধবার ওই কমিটির প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়।

আজ বেলা একটার দিকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। এ সময় তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মমিনুর রশীদ উপস্থিত ছিলেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, অ্যামোনিয়া ট্যাংকটির নিরাপত্তার জন্য পাঁচ ধরনের সুরক্ষা যন্ত্র রয়েছে। দুর্ঘটনার সময় সব কটিই অকেজো ছিল। ট্যাংকের সঙ্গে সংযুক্ত শীতলীকরণ পদ্ধতি, গ্যাসের চাপ মাপার জন্য দুটি ‘প্রেশার গজ’ এবং ট্যাংকের তাপ ও চাপ মাপার জন্য স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি অকেজো ছিল। ট্যাংকে থাকা অতিরিক্ত গ্যাসের চাপ বের করে দেওয়া জন্য দুটি ‘প্রেশার ভেন্ট’ও দুর্ঘটনার সময় বন্ধ ছিল। স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্যাসের চাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য ফ্লেয়ার সিস্টেমও দুর্ঘটনার সময় অকেজো ছিল। এসব যন্ত্রপাতি নষ্ট ও বন্ধ থাকায় গ্যাসের চাপে ট্যাংকটির নিচের অংশে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে ট্যাংকটি ২০ ফুট দূরে গিয়ে পড়ে। বিস্ফোরণের আগে ট্যাংকটিতে ৩৪০ টন অ্যামোনিয়া গ্যাস ছিল।

যন্ত্রাংশ নষ্ট থাকা এবং অকেজো হয়ে পড়ার পর তা তদারকি করা হয়নি বলে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, যন্ত্রাংশ অকেজো থাকার বিষয়টি অপারেশন বিভাগ থেকে রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগকে জানানো হয়। ইনস্ট্রুমেন্ট ও রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ থেকে কারিগরি লোক পাঠানো হলেও তাঁরা মেরামতে সক্ষম হননি। মেরামতের বিষয়টি উপপ্রধান প্রকৌশলী দিলীপ কুমার বড়ুয়া এবং মহাব্যবস্থাপক (কারিগরি ও রক্ষণাবেক্ষণ) নকিবুল ইসলামও তদারকি করেননি। এই দুই কর্মকর্তা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করলে এ দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব হতো।

তদন্ত প্রতিবেদন তুলে ধরে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘দায়ী দুই কর্মকর্তার কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। কারখানার কর্মকর্তারা একজন আরেকজনের ওপর দোষ চাপান। কেউ সমস্যার সমাধান করেন না। তাঁদের দায়িত্বে অবহেলার জন্য ট্যাংক বিস্ফোরণের ঘটনায় মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছিল। তবে তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসন সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতায় বিষয়টি মোকাবিলা করেছে।’ তদন্ত প্রতিবেদন শিল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে তিনি জানান।

পাঁচ সুপারিশ
তদন্ত প্রতিবেদনে পাঁচটি সুপারিশ করা হয়েছে। এই পাঁচটি সুপারিশ হলো ডিএপি কারখানার ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ও আন্তবিভাগীয় সমন্বয়, কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের কার্যক্রমে জবাবদিহি নিশ্চিত করা, কারখানার নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ক্রয়, মেরামত ও অন্যান্য বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের ওপর ন্যস্ত করা, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে শক্তিশালী ‘চেইন অব কমান্ড’ প্রতিষ্ঠা করা। এ ছাড়া কারখানার ইউটিলিটি সার্ভিসের জন্য নিজস্ব ফায়ার ফাইটিং এবং সেফটি ইউনিট থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন বলে সুপারিশ করা হয়েছে।

ক্ষতি ৩০ কোটি টাকা
এই দুর্ঘটনায় আনুমানিক ৩০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে নতুন ট্যাংক স্থাপনের ব্যয়ও ধরা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ধ্বংস হয়ে যাওয়া ট্যাংকটির আনুমানিক মূল্য ছিল পাঁচ থেকে ছয় কোটি টাকা। নতুন ট্যাংক স্থাপনে ব্যয় ধরা হয়েছে সর্বোচ্চ ২২ কোটি টাকা। মৎস্যসম্পদের ক্ষতি হয়েছে ১ কোটি ২৭ লাখ টাকা। প্রাণিসম্পদের ক্ষতি হয়েছে দুই লাখ টাকা।

এ জাতীয় আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2023 Mohajog