দুই মেয়ে সুমাইয়া রাবেয়া ও তাহেরা তাসনিম, পুত্রবধূ শাহেদা তাহমিদা ও তাহমিনা আক্তার এবং ভাতিজা হাসান জামালকে নিয়ে বুধবার দুপুরে কাশিমপুর কারাগারে কাসেমকে দেখতে যান আয়েশা।
প্রায় দুই ঘণ্টা পর বিকাল পৌনে ৪টার দিকে কারাগার থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
কাসেমপত্নী বলেন, “আমার ছেলে ও আইনজীবী আহমেদ বিন কাসেমকে সাদা পোশাকের পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। তাকে না পাওয়া পর্যন্ত আমরা প্রাণভিক্ষা বা অন্য কোনো বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারছি না।”
এরপর আর কোনো কথা না বলে অ্যাম্বুলেন্সে চড়ে চলে যান যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা মীর কাসেমের পরিবারের ছয় সদস্য।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক বলেন, “পরিবারের সদস্যরা প্রায় দুই ঘণ্টা মীর কাসেমের সঙ্গে কথা বলেছেন।”
মীর কাসেমের ছেলে মীর আহমেদ বিন কাসেমকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে গত ১০ অগাস্ট পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হলেও পুলিশ বলছে, বিষয়টি তাদের অজানা।
মঙ্গলবার সকালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ রিভিউ আবেদন খারিজ করে দিলে কারাগারে বসে এক ব্যান্ডের রেডিওর মাধ্যমে সে খবর জানতে পারেন মীর কাসেম।
বুধবার সকালে তাকে তার রিভিউ খারিজের রায় পড়ে শোনায় কারা কর্তৃপক্ষ।
কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন কি না- সে সিদ্ধান্ত জানাতে কাসেম সময় চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেল সুপার।
সব বিচারিক প্রক্রিয়ার নিষ্পত্তি হওয়ায় জামায়াতের অর্থ যোগানদাতা হিসেবে পরিচিত মীর কাসেমের সামনে এখন কেবল ক্ষমা প্রার্থনার সুযোগই বাকি।
তিনি প্রাণভিক্ষার সুযোগ নিতে চাইলে তার দরখাস্ত রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে। রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তের পরই দণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হবে।
আর আবেদন না করলে, অথবা আবেদন করেও রাষ্ট্রপতির অনুকম্পা না পেলে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কারা কর্তৃপক্ষ দণ্ড কার্যকর করবে।
কারাগারের এক কর্মকর্তা জানান, সকালে রায় পড়ে শোনানোর পর কিছুটা চিন্তিত দেখাচ্ছিল মীর কাসেমকে। তার চোখে-মুখে ছিল উদ্বেগ।
৬৩ বছর বয়সী মীর কাসেম আলী ২০১২ সাল থেকে এ কারাগারে রয়েছেন। শুরুতে কারাগারে ডিভিশন পেলেও ২০১৪ সালে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর তাকে পাঠানো হয় কনডেম সেলে।