প্রতিবেদক : জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় প্রধান আসামি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থন ফের পিছিয়েছে। আগামী ০১ ডিসেম্বর দিন পুনর্নির্ধারণ করে তাকে হাজির হওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) রাজধানীর বকশিবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদারের অস্থায়ী আদালত এই আদেশ দেন।
এরপর শুরু হয় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক হারুন-অর রশিদকে আসামিপক্ষের জেরা।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলা দু’টির বিচারিক কার্যক্রম চলছে আদালতটিতে।
বৃহস্পতিবার চ্যারিটেবল মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ধার্য থাকলেও অনুপস্থিত ছিলেন খালেদা জিয়া। তিনি অসুস্থ থাকায় উপস্থিত হতে পারেননি উল্লেখ করে তা পেছাতে সময়ের আবেদন জানান তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া।
অন্যদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের স্পেশাল পিপি মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় আইন অনুসারে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে মামলার কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার আবেদন জানান।
সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ০১ ডিসেম্বর খালেদা জিয়াকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। অন্যথায় বিধি অনুসারে তার জামিন বাতিল করা হবে বলেও জানান।
পরে অরফানেজ মামলায় হারুন-অর রশিদকে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমানের পক্ষে জেরা শুরু করেন তার আইনজীবী।
চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় মোট আসামি চারজন। খালেদা ছাড়া অভিযুক্ত অপর তিন আসামি হলেন- খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
জামিনে থাকা জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খান আদালতে উপস্থিত আছেন। হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক।
এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন মোট ৩২ জন সাক্ষী। জামিনে থাকা অন্য দুই আসামিও আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন।
অন্যদিকে অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াসহ আসামি মোট ছয়জন। অন্য চার আসামি হলেন- মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
আসামিদের মধ্যে ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক। বাকিরা জামিনে আছেন। তারা আদালতে হাজির হয়েছেন এবং তারেক রহমানের পক্ষে তার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া হাজিরা দাখিল করেছেন।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা দায়ের করা হয়। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।
অন্যদিকে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।
২০১৪ সালের ১৯ মার্চ দুই মামলায় খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন ঢাকা তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের আগের বিচারক বাসুদেব রায়।