প্রতিবেদক : সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে সমন্বয় সভা আয়োজন এবং পুলিশি হয়রানির অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাসে বৃহত্তর চট্টগ্রামে পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত করেছে বাংলাদেশে সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন।
মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক সভার পর এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
তার আগে সকাল ৬টা থেকে বাস না পেয়ে ভোগান্তিতে ছিল চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজারের যাত্রীরা।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কার্যালয়ে দুপুরের সভা শেষে শ্রমিক ফেডারেশনের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মো. মুছা বলেন, “বিকাল ৩টায় পরিবহন ধর্মঘট সাময়িক স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
“এরপর পরিবহন শ্রমিকদের এ বিষয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ধর্মঘট স্থগিত থাকবে। ওইদিন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে মেয়রের উপস্থিতিতে সভা হওয়ার কথা রয়েছে।”
“পুলিশি হয়রানির বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা আশ্বাস দিয়েছেন, যদি কোনো অভিযোগ পাওয়া যায় তা সিএমপি কমিশনার এবং জেলা পুলিশ সুপারকে সরাসরি জানাতে। তাদের জানানো হলেই সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া হবে,” বলেন মুছা।
সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মাসুদ-উল-হাসান বলেন, শ্রমিকদের দাবির মধ্যে সিসিসি, বিআরটিএ এবং বন্দর সংশ্লিষ্ট কিছু দাবি রয়েছে।
“এসব বিষয়ে তো আমরা আশ্বাস দিতে পারি না। তাই সমন্বয় সভার আয়োজন করা হবে। সড়কে হয়রানির বিষয়ে তাদের কিছু দাবি ছিল সেটার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছি।”
এদিকে ধর্মঘট স্থগিতের ঘোষণা বেলা ৩টার দিকে দেওয়া হলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরীতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি।
গাড়ির জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা
ধর্মঘটের কারণে অনেক রুটে চালক-শ্রমিকরা বাস চালানো বন্ধ করে দেওয়ায় বিকালে তারা আর গাড়ি নিয়ে সড়কে নামেননি। ফলে বিকাল ও সন্ধ্যায়ও অফিস ফেরত মানুষদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।
বিকেল ৫টায় শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন এলাকায় দেখা যায়, দক্ষিণ চট্টগ্রামমুখী বাসের সংখ্যা খুবই কম। যাত্রীরা গন্তব্যে যেতে বাসের অপেক্ষায় আছেন।
তবে কদমতলী বাস টার্মিনাল থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে নোয়াখালীমুখী বাস চলাচল শুরু হয়।
গত শনিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা।
পরিবহন শ্রমিকদের দাবির মধ্যে আছে- বাস-ট্রাক-প্রাইম মুভার ও ট্রেইলারের জন্য টার্মিনাল নির্মাণ, সড়কে পুলিশী হয়রানি বন্ধ করা, অটো রিকশা ও অটোটেম্পুর জন্য পার্কিং স্পট, অনিবন্ধিত সিএন অটোরিকশার নিবন্ধন প্রদান ও মালিকের জমা ছয়শ টাকা নির্ধারণ, ভুয়া সংগঠনের নামে সন্ত্রাসী কায়দায় পরিবহন শ্রমিক সংগঠন দখলদারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, বিআরটিএ ও যুগ্ম শ্রম পরিচালকের দপ্তরের দুর্নীতি-হয়রানি-অব্যবস্থাপনা বন্ধ, পরিবহন শ্রমিকদের নিয়োগপত্র দিয়ে কল্যাণ তহবিলের টাকা পাওয়া নিশ্চিত করা।