প্রতিবেদক : বিনা বিচারে দেড় দশক ধরে কারাগারে ৪ ব্যক্তির বিচার ৯০ দিনের মধ্যে শেষ করতে সময় বেঁধে দিয়েছে হাইকোর্ট। এই ৪ জন হলেন চাঁন মিয়া, মকবুল, সেন্টু ও বিল্লাল। রোববার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের বেঞ্চ এই আদেশ দেয়।
এর মধ্যে মকবুল, সেন্টু ও বিল্লালকে আদালত জামিন দিয়েছে। তবে চাঁন মিয়া নিম্ন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ায় তাকে কারাগারেই থাকতে হবে।
আদালত বলেছে, মকবুল, সেন্টু ও বিল্লালের মামলার বিচার ৯০ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে। আর নিম্ন আদালতে চাঁন মিয়ার মামলার নিষ্পত্তি করতে হবে ৬০ দিনের মধ্যে।
এক আইনজীবী ওই চারজনকে নিয়ে একটি টেলিভিশনে সম্প্রচারিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনলে গত ২০ নভেম্বর এই বেঞ্চই তাদের আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছিল। পাশাপাশি ওই চারজনকে কেন জামিন দেওয়া হবে না– তা জানতে চেয়ে সেদিন রুলও জারি করেছিল আদালত।
সে অনুযায়ী কারা কর্তৃপক্ষ রোববার তাদের আদালতে হাজির করলে বিচারকরা ওই চারজনের কাছেই তাদের পরিস্থিতি জানতে চান।
চার আসামির পক্ষে আদালতে ছিলেন লিগ্যাল এইডের আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকা ও কুমার দেবুল দে। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শহীদুল ইসলাম খান।
পরে আইনুন নাহার সিদ্দিকা জানান, চার বন্দির মামলা নিষ্পত্তির জন্য ঢাকা লিগ্যাল এইড অফিস থেকে তাদের আইনি সহায়তা দিতেও নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
ঢাকার শ্যামপুর থানার একটি হত্যা মামলায় ১৯৯৯ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার পর আর জামিন পাননি চাঁন মিয়া। দেড় যুগেও ওই মামলার কোনো অগ্রগতি হয়নি। কাশিমপুর কারাগার থেকে তাকে রোববার হাই কোর্টে হাজির করা হয়।
মাদারীপুরের মকবুল হোসেন রাজধানীর উত্তরা থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হন ২০০০ সালে। এরপর ১৬ বছরে মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন হয়নি। ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে মকবুলের পক্ষে আইনি লড়াইয়ে কোনো আইনজীবীও ছিল না।
মতিঝিলের এজিবি কলোনির সেন্টু কামাল গ্রেপ্তার হন ২০০১ সালে। সর্বশেষ গত মাসেও তাকে হাজির করা হয়েছিল ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে। গত ১৫ বছরে ৫৯ কার্যদিবস তাকে আদালতে হাজির করা হলেও মামলার বিচার শেষ হয়নি।
তেজগাঁও থানায় দায়ের হওয়া একটি হত্যা মামলায় ২০০২ সালে গ্রেপ্তার হন কুমিল্লার বিল্লাল হোসেন। তার মামলাটিও ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন।
রাজধানীর সূত্রাপুর থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বিনা বিচারে ১৭ বছর কারাভোগের পর শিপন নামের এক আসামিকে সম্প্রতি জামিন দেয় হাই কোর্ট।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও জেবিএম হাসানের হাই কোর্ট বেঞ্চ গত ৮ নভেম্বর বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করলে কারা কর্তৃপক্ষ তাকে মুক্তি দেয়।