প্রতিবেদক : যশোরের উপশহর এলাকায় এক চীনা নাগরিককে ‘পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে’ হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই বিদেশির ব্যবসার কেয়ারটেকারসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানান, চেং হি সং নামের ৪৫ বছর বয়সী ওই চীনা নাগরিক বছর পাঁচেক ধরে বাংলাদেশে বসবাস করে আসছিলেন। চীন থেকে ইজিবাইকের যন্ত্রাংশ আমদানি করে যশোরে ব্যবসা করতেন তিনি।
উপশহর এলাকার ২ নম্বর সেক্টরে এক বাড়ির নিচতলায় চেং হি সংয়ের আমদানি করা যন্ত্রাংশের গুদাম থেকেই বৃহস্পতিবার সকালে তার লাশ উদ্ধার করা হয় বলে পুলিশ সুপার জানান।
পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তারদের মধ্যে একজন ওই চীনা নাগরিকের ব্যবসার কেয়ারটেকার ও দোভাষী নাজমুল হাসান (২২)। অন্যজন তার ভাইপো মুক্তাদির রহমান রাজু। তাদের দুজনেরই বাড়ি নেত্রোকোণা জেলায়।
যশোর পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বলেন, “পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে ওই চীনা ব্যবসায়ীকে হত্যা করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক দুজন বলেছে, ব্যবসার টাকা-পয়সা লুট করার জন্য গতকাল (বুধবার) বেলা ১১টার দিকে তারা এ ঘটনা ঘটায়।”
তিন তলা যে বাড়ি থেকে পুলিশ চেং হি সংয়ের লাশ উদ্ধার করেছে, তার মালিক মাসুদুর রহমান মিলন জানান, তার বাড়ির নিচতলা গুদাম হিসেবে ব্যবহার করার জন্য সাত মাস আগে ভাড়া নেন ওই চীনা নাগরিক।
ঢাকায় বাসা থাকলেও ব্যবসার জন্য প্রায়ই তাকে যশোরে থাকতে হত। যশোরে তিনি থাকতেন জেইলরোডের বেলতলার এক বাসায়।
পরিদর্শক রফিকুল বলেন, হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পর বুধবার রাত ৯টার দিকে ঢাকায় ওই চীনা নাগরিকের স্ত্রী টোমা লাইনকে ফোন করে নাজমুল বলেন, চেং হি সংকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এরপর টোমা লাইন বিষয়টি ঢাকায় চীনা দূতাবাসকে জানান এবং রাতেই রওনা হয়ে সকালে যশোরে পৌঁছান।
এরইমধ্যে ঢাকা থেকে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ওই গুদামে গিয়ে চেং হি সংয়ের লাশ পায় পুলিশ।
পরিদর্শক রফিকুল বলেন, “গ্রেপ্তার দুজন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। তাদের পোশাকেও রক্তের আলামত দেখা গেছে।”
পুলিশের খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি একরামুল হকও খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।