প্রতিবেদক : সাভারের আশুলিয়ায় তৈরি পোশাক কারখানায় ‘অরাজকতা সৃষ্টিতে সহায়তা’ ও শ্রমিকদের ‘উসকানির’ অভিযোগে একুশে টেলিভিশনের সাভার প্রতিনিধি নাজমুল হুদাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আশুলিয়া থানার ওসি মহসিনুল কাদির জানান, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে আশুলিয়ার বাইপাইল থেকে তাকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
“পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে গোয়েন্দা পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।” নাজমুলের মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও ব্যক্তিগত ব্যবহারের গাড়ি জব্দ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
নাজমুল হুদা একুশে টেলিভিশনের পাশাপাশি দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনেরও সাভার প্রতিনিধি। আশুলিয়ার এ শ্রমিক অসন্তোষ ঘিরে এ পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
বেতন বৃদ্ধিসহ অন্যান্য দাবিতে গত সোমবার আশুলিয়ার ২৫টি কারখানার শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ শুরু করেন। এরপর কয়েকজন মন্ত্রী বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলেও আন্দোলন অব্যাহত থাকে এবং মঙ্গলবার ৫৫ কারখানায় কাজ বন্ধ থাকে।
এরপর বিজিএমইএ এর পক্ষ থেকে আশুলিয়ার ৫৫ কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে উইন্ডি অ্যাপারেলস লিমিটেড ও ফাউনটেইন গামের্ন্টস থেকে ২৫৬ জন শ্রমিককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আটক করা হয় ১৯ শ্রমিক নেতা এবং একজন সাংবাদিককে।
ওসি মহসিনুল কাদির জানান, শুক্রবার রাতেই আশুলিয়া থানার এসআই শাহাদাৎ হোসেন বাদী হয়ে নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
“মামলায় তার বিরুদ্ধে টেলিভিশন ও পত্রিকায় মিথ্যা ও উসকানিমূলক সংবাদ পরিবেশন এবং ফেসবুকে একাধিক আইডির মাধ্যমে প্রচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।”
গ্রেপ্তারকৃত নাজমুলের ছোট ভাই ডা. কামরুজ্জামান বলেন, “আমার ভাই নাজমুলকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে। সবাই যেভাবে সংবাদ করে সেও সেইভাবেই করেছে।”
এদিকে শনিবার অন্যান্য কারখানাগুলো খোলা থাকলেও বন্ধ ৫৫টি কারখানার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সড়কে টহল দিচ্ছে র্যাব ও আমর্ড পুলিশ।
সকাল থেকেই শিল্প এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।