আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নিয়োগ দেয়া রাষ্ট্রদূতদের ২০ জানুয়ারির মধ্যে পদত্যাগ করতে নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির হবু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি ক্ষমতা গ্রহণের আগেই পদত্যাগ করুন। ২০ জানুয়ারির পর কাউকে বিশেষ কোনো সুবিধা দেয়া হবে না।’
ইন্ডিপেনডেন্টের খবরে বলা হয়, নজিরবিহীন এ ঘোষণার মাধ্যমে ট্রাম্প আবারও প্রমাণ করলেন, কূটনৈতিক নিয়মনীতির কোনো তোয়াক্কা করেন না তিনি।
এদিকে ট্রাম্পের এ ঘোষণা দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই কানাডায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ব্রুস হেইম্যান পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত বা বিশেষ দূতরা নতুন প্রশাসন ক্ষমতায় এলে সাধারণত দায়িত্ব পালন থেকে অব্যাহতি নেন। তবে অনেক রাষ্ট্রদূত সপরিবারে বিভিন্ন দেশে থাকেন। সন্তানদের পড়াশোনা ও জরুরি কোনো কারণে কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস অতিরিক্ত সময় পেয়ে থাকেন কোনো কোনো রাষ্ট্রদূত।
ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে এএফপি জানায়, গত ২৩ ডিসেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশ্বের ১৮৮টি দেশের মার্কিন দূতাবাসে এক আকস্মিক তারবার্তা পাঠায়। ওই বার্তায় ‘কোনো ধরনের ব্যতিক্রম ছাড়া’ সব রাষ্ট্রদূতকে দেশে ফেরার নির্দেশ দেয়া হয়। তবে পররাষ্ট্র কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনকারীদের এর বাইরে রাখা হয়েছে।
ওবামার নিয়োগ দেয়া রাষ্ট্রদূতদের হঠাৎ করে দেশে ফেরত আনার ফলে ব্রিটেন, জার্মানি ও কানাডার মতো গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোতে আমেরিকার পক্ষ থেকে যথাযথ কোনো প্রতিনিধি আপাতত থাকবে না। ট্রাম্প এ পর্যন্ত শুধু ইসরাইল ও চীনের জন্য পরবর্তী রাষ্ট্রদূতের নাম ঘোষণা করেছেন। বাকি দেশগুলোতে নিয়োগ পেতে যাওয়া রাষ্ট্রদূতদের নাম ঘোষণা না করেই আগের রাষ্ট্রদূতদের ফেরত আসার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
ট্রাম্পের এ ঘোষণার পর শুক্রবার এক টুইট বার্তায় পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে কানাডায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ব্রুস হেইম্যান জানান, ‘১-২০ (২০ জানুয়ারি) বাস্তবায়ন করতে আমি রাষ্ট্রদূতের পদ থেকে পদত্যাগ করছি।’ বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ওবামার খুব ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত তিনি।
এদিকে, ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে তার মনোনীত পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনের কাছে কূটনীতিকরা চিঠি লিখবেন বলে জানা গেছে। তারা মনে করেন, এভাবে হঠাৎ করে দেশে ডেকে পাঠানোর ফলে তাদের ব্যক্তিগত জীবন মারাত্মকভাবে বিঘিœত হবে। বিশেষ করে ট্রাম্পের ছেলের স্কুলের ফাইনাল পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্পকে যেমন নিউইয়র্কের বাসভবনে থাকার অনুমতি দেয়া হয়েছে, তেমনই রাষ্ট্রদূতদের তলব করা অন্যায়।