প্রতিবেদক : গোবিন্দগঞ্জে চিনিকলের বিরোধপূর্ণ জমি থেকে উচ্ছেদের সময় গুলির ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের আদেশে সাঁওতালদের ‘বাঙ্গালী দুষ্কৃতিকারী’ বলায় হাই কোর্টের তলবে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে পার পেয়েছেন গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল ইসলাম।
এছাড়া সাঁওতালদের ঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনার সঙ্গে পুলিশ জড়িত কিনা এবং কারা ওই ঘটনায় দায়ী- তা তদন্তে আরও ২০ দিন সময় পেয়েছেন গাইবান্ধার মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. শহিদুল্লাহ।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাই কোর্ট বেঞ্চ রোববার এ আদেশ দেয়।
রংপুর চিনিকল কর্তৃপক্ষ গত বছর ৬ নভেম্বর তাদের সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের অধিগ্রহণ করা জমি থেকে সাঁওতালদের উচ্ছেদ করতে গেলে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষের সময় সাঁওতালদের বাড়িঘরে লুটপাট হয়। এক পর্যায়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনজন, আহত হন অনেকে।
ওই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষ থেকে গাইবান্ধায় দুটি মামলা করা হয়। আর হাইকোর্টে হয় দুটি রিট আবেদন।
সাঁওতালদের ঘরে পুলিশের আগুন দেওয়ার একটি ভিডিও নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তুমুল আলোচনা শুরু হলে এই হাই কোর্ট বেঞ্চ জেলার মুখ্য বিচারিক হাকিমকে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।
১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ পেয়ে গত ২৭ ডিসেম্বর ঘটনাস্থল গিয়ে সাক্ষ্য নেওয়া শুরু করেন মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. শহিদুল্লাহ। উচ্চ আদালতের নির্দেশ পুলিশের তদন্ত শাখা পিবিআইও একই সময়ে ক্ষতিগ্রস্তদের করা দুই মামলার তদন্ত শুরু করে।
ডেপুটি এটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু সাংবাদিকদের জানান, মুখ্য বিচারিক হাকিম রোববার হাই কোর্টের কাছে আরও এক মাস সময় চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে হাই কোর্ট তাকে আরও ২০ দিন সময় দিয়ে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয়।
সাজু বলেন, গাইবান্ধার এসপি আদালতে হাজির হয়ে ‘বাঙালি দুষ্কৃতিকারী’ শব্দ ব্যবহারের জন্য ভুল স্বীকার করে নিঃশর্ত ক্ষমা চান। বিচারক তাকে সতর্ক করে দিয়ে এবারের মত রেহাই দিয়েছেন।