আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জম্মু ও কাশ্মিরে মোতায়েন ভারতীয় বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) এক কনস্টেবল ফেইসবুকে পোস্ট করা তিনটি ভিডিওতে অভিযোগ করেছেন, বিপদজনক সীমান্তে তাদের প্রায় অভুক্ত অবস্থায় দায়িত্বপালন করতে হয়।
ভিডিওগুলো ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, তিনি বিএফএফ সেনার অভিযোগগুলো তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি, এনডিটিভি।
সেলফি মোডে তোলা ওই ভিডিওতে তেজ বাহাদুর যাদব নামের ওই সেনা পাকিস্তান সীমান্তে দায়িত্বরত বিএফএফ জওয়ানদের দুর্দশার কথা তুলে ধরেছেন। এর জন্য বাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের দুর্নীতিকে দায়ী করেছেন তিনি।
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার করা হয়েছে।
এই ভিডিওটি দেখার পর সোমবার সন্ধ্যায় এক ট্যুইটে রাজনাথ সিং বলেছেন, “বিএফএফ জওয়ানের অবস্থা সম্পর্কিত ভিডিওটি আমি দেখেছি। এ বিষয়ে বিএসএফের কাছ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে একটি প্রতিবেদন চাওয়ার কথা বলেছি স্বরাষ্ট্র সচিবকে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।”
ফেইসবুকে প্রায় চার মিনিট পরপর ছাড়া তিনটি ভিডিওতে ৪০ বছর বয়সী তেজ বাহাদুরকে রাইফেল কাঁধে বিএসএফের ইউনিফর্ম পরা অবস্থায় দেখা যায়। কাশ্মির সীমান্তে তুষারপাতের মধ্যে দাঁড়িয়ে তিনি জানান, তিনি ২৯ ব্যাটেলিয়নে আছেন এবং সীমান্তের কঠোর পরিস্থিতির মধ্যে তিনি ও তার সহকর্মীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে দায়িত্বপালন করেন, কিন্তু তাদের অপর্যাপ্ত খাবার দেওয়া হয় যেগুলো আবার স্বাদহীন।
তিনি বলেন, “সকালের নাস্তায় আমাদের শুধু একটা পারোটা ও চা দেওয়া হয়, সঙ্গে কোনো আচার বা সব্জি দেওয়া হয় না। দুপুরে রুটির সঙ্গে ডাল দেওয়া হয়, কিন্তু ডালে থাকে শুধু হলুদ আর লবণ।
কখনো কখনো অভুক্ত অবস্থায়ও তাদের ঘুমাতে যেতে হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
খাবারের ছবি পোস্ট করে তিনি বলেন, “এসব খাবার খেয়েই ১১ ঘন্টা ধরে দায়িত্বপালন করি আমরা। কখনো কখনো পুরো সময়টিই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। কীভাবে একজন জওয়ান তার দায়িত্বপালন করবে?”
ফেইসবুকে তেজ বাহাদুর যাদবের পোস্ট করা ভিডিও থেকে। সৌজন্যে: এনডিটিভি ফেইসবুকে তেজ বাহাদুর যাদবের পোস্ট করা ভিডিও থেকে। সৌজন্যে: এনডিটিভি তিনি আরো বলেন, “আমি বলছি, ভারত সরকার প্রয়োজনীয় সবকিছুই পাঠায় কিন্তু জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা তা চুরি করেন।”
‘ক্ষমতাবান’ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কথা বলায় তার জীবন হুমকির সম্মুখীন হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখার জন্য তিনি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি অনুরোধ জানান।
সোমবার পোস্ট করা ভিডিওটি ৮০ লাখেরও বেশি শেয়ার করা হয়েছে। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর তেজ বাহাদুরকে কাশ্মীর সীমান্ত থেকে সরিয়ে পুঞ্চে ২৯ ব্যাটেলিয়নের সদরদপ্তরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিএসএফের সূত্রগুলো জানিয়েছে, ২০১০ সালে বাহাদুর তার এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে হুমকি দিয়ে কোট মার্শালের মুখোমুখি হন, চার বছর বরাখাস্ত থাকার পর তাকে চাকরিতে ফেরানো হয়। এ কারণেই তিনি এসব ভিডিও পোস্ট করেছেন।