প্রতিবেদক : চা শিল্পের ইতিহাসে পণ্যটির বাজার প্রসারে প্রথমবারের মতো ঢাকায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রদর্শনী, যাকে দেশীয় চা শিল্পের দেড়শ বছরের ইতিহাসে প্রথম বলছেন আয়োজকরা। বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটিতে বাংলাদেশ চা বোর্ডের আয়োজনে তিনদিন ব্যাপী এই প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় চা বাগান, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বিপণন সংস্থা ও চা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো।
বৃহস্পতিবার সকালে প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, অর্থ প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, বাণিজ্য সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুনসহ শীর্ষ ব্যক্তিরা।
চা বোর্ডের চেয়ারম্যান সাফিনুল ইসলাম, বাংলাদেশীয় চা সংসদের চেয়ারম্যান আরদাশীর কবির, টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান শান্তনু বিশ্বাসসহ চা শিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও চা বাগানের মালিকরাও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন।
প্রদর্শনীতে ১৬টি স্টল ও ৩০টি প্যাভিলিয়ন থাকছে। আগামী ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত প্রদর্শনী চলবে বলে আয়োজকরা জানান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চা শিল্পের সঙ্গে নিজের শৈশব কৈশরের নানা স্মৃতি ও বাংলাদেশে চা চাষের দেড়শ বছরের উল্লেখযোগ্য ঘটনার স্মৃতিচারণ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।
তিনি বলেন, “চা শিল্পের দেড়শ বছরের ইতিহাসে দেশে এটিই প্রথম প্রদর্শনী। ভারতীয় উপমহাদেশের কোথাও হয়েছিল কিনা আমার জানা নেই। আমার আশ্চর্য লাগছে, এই প্রদর্শনী চা শিল্পের ইতিহাসে একটি বিশেষ দিন।”
শৈশবে ব্রিটিশ শাসনামলে রেল স্টেশনে তাকেও বিনামূল্যের চা খেতে হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন প্রবীণ এই রাজনীতিক।
“বৃটিশ শাসনামলে ১৮৫০ সালের দিকে এই অঞ্চলে চা চাষ শুরু হয়। ব্রিটিশরা সিলেটের এক বাঙালিকে দিয়ে, তাকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে চাষ শুরু করে।
“আমার মনে আছে, আমি যখন কিশোর তখনও বিনা পয়সায় চা পাওয়া যেতো। রেল স্টেশনে লেখা থাকত- এখানে বিনা পয়সায় চা পাওয়া যায়। কোনো চার্জ- টার্জ কিচ্ছু হতো না।”
চা বোর্ডের কর্মকর্তা বলেন, প্রদর্শনীর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাজারে দেশীয় চায়ের ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরা। বাংলাদেশি চায়ের মান ও বৈচিত্র নিয়ে তথ্য উপাত্ত থাকছে মেলার স্টলগুলোতে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চা বোর্ড উদ্ভাবিত নতুন চা ‘বিটি১৯’ ও ‘বিটি২০’ এর চারা অবমুক্ত করা হয়।
প্রদর্শনীতে ডেনিশ সিমলা টি, মেগনলিনা টি, ইস্পাহানি চা, কাজি অ্যান্ড কাজি টি, হালদা ভেলি টি, এইচআরসি টি, ন্যাশনাল টি, সিলন টি, শ’ওয়ালেস টি, ফিনলে টি, মহসিন টি, ব্র্যাক টি, ডানকান টি, ফ্রেশ টিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।
প্রতি কেজি সাড়ে তিন হাজার টাকা মূল্যের রপ্তানিযোগ্য চা নিয়ে প্রদর্শনীতে এসেছে সদ্য বাজারে আসা কসমো চা। দেশীয় বাজার ও রপ্তানি বাজারের জন্য পৃথক চায়ের প্যাকেজ রয়েছে বলে জানান নতুন এই কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আজমল।
বাংলাদেশীয় চা সংসদ, সিটি গ্রুপ, ডানকান ব্রাদার্স, ফিনলে চা, এইচআরসি, ইস্পাহানি, সিলোন চা এই আয়োজনের সহযোগী।