1. sardardhaka@yahoo.com : adminmoha : Sardar Dhaka
  2. nafij.moon@gmail.com : Nafij Moon : Nafij Moon
  3. rafiqul@mohajog.com : Rafiqul Islam : Rafiqul Islam
  4. sardar@mohajog.com : Shahjahan Sardar : Shahjahan Sardar
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:২৬ পূর্বাহ্ন

মিয়ানমারকে সামরিক সরকারের মতো আচরণ না করার আহ্বান

মহাযুগ নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০১৭
  • ১৭৭ বার

প্রতিবেদক : মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক সরকারকে ‘সামরিক’ সরকারের মতো আচরণ না করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচি’র বিশেষ দূত চাও তিন এর সঙ্গে বৈঠকে এ আহ্বান জানানো হয়।

গত বুধবার ঢাকা সফরে পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হকের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন চাও তিন। সেদিন বিকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী এবং সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিনি।

বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রোহিঙ্গা সমস্যা একটি আঞ্চলিক সমস্যা। আর এই সমস্যার সঙ্গে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ জড়িত। এ অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য রোহিঙ্গা ইস্যুতে ছাড় দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই।

রোহিঙ্গা সমস্যার ভয়াবহতা বোঝার জন্য চাও তিনকে গোপনে হেলিকপ্টারে করে কক্সবাজার ঘুরে আসার প্রস্তাবও দেওয়া হয়।

অং সান সুচি’র বিশেষ দূতের ঢাকায় আসার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে একাধিক কর্মকর্তা তিনটি প্রধান উদ্দেশ্যর কথা বলেন।

তাদের মতে, প্রথম উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশ-মিয়ানমার বিষয়ে তার অবস্থান কেন পরিবর্তন করেছে, সেটি বোঝা। দ্বিতীয়ত আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের নিয়ে একই ধরনের শক্ত মনোভাব বজায় রাখবে কিনা এবং তৃতীয়ত নতুন আসা ৬৫ হাজার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা।

এই তিনটি বিষয়েই বাংলাদেশ শক্ত অবস্থানে ছিলো। তাই মিয়ানমারের দূতকে হতাশা নিয়ে বাংলাদেশ ছাড়তে হয়েছে।

সরকারের একজন কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিশেষ দূত বিভিন্ন বৈঠকে বলেছেন, বাংলাদেশ সবসময় মিয়ানমারের সঙ্গে বন্ধুসুলভ ব্যবহার করে এসেছে। কিন্তু এখন বাংলাদেশ তার অবস্থান পরিবর্তন করে রোহিঙ্গা বিষয়ে অনেক বেশি সরব। তিনি এর কারণ জানতে চান।’

বৈঠকে মিয়ানমারের বিশেষ দূতকে জানানো হয়, অতীতের সঙ্গে বর্তমান বাংলাদেশের তুলনা করলে মিয়ানমার ভুল করবে। রোহিঙ্গাদের কারণে বিশেষ করে বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলে বাংলাদেশের জন্য সংকট তৈরি হয়েছে। এ দু’টো অঞ্চল বাংলাদেশের জন্য কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ শুধু রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়াই নয়, তাদের ফেরত না আসার বিষয়েও নিশ্চিত করতে চায়। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের এমন জোরালো অবস্থান বিশেষ দূতকে অবাকই করেছে।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, মিয়ানমার সরকারকে বাংলাদেশে অবস্থান করা দেশটির নাগরিকদের ফেরত নিতে হবে এবং তাদের সব ধরনের অধিকার দিতে হবে। নাহলে মিয়ানমারের সঙ্গে সামরিক সরকারের কোনও পার্থক্য থাকবে না। নতুন আসা ৬৫ হাজার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা করতে চাইলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করা হয়।

সরকারের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘মিয়ানমারের প্রস্তাব ছিলো, বাংলাদেশ রাজি হলে সেই বৈঠক থেকেই ৬৫ হাজার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ভেরিফিকেশনের কাজ শুরু করা। কিন্তু বাংলাদেশ এ ফাঁদে পা দেয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এ প্রস্তাবে রাজি হলে একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠাতে পারতাম না। কারণ, তাদের কেউই এভাবে ফেরত যেতে চাইতো না। তারা ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে মিয়ানমার ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে কেউ ফেরত গেলেও সে আবার বাংলাদেশে পালিয়ে আসবে।’

শুধু গত তিন মাসে আসা ৬৫ হাজার নয়, বাংলাদেশ সব রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠাতে চায়।

২০১৩ সালে দু’দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল বাংলাদেশ সরকারিভাবে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার করবে না। অন্যদিকে মিয়ানমারও এ জাতিগোষ্ঠির ক্ষেত্রে ‘বাঙালি’ শব্দটি ব্যবহার করবেনা।

বাংলাদেশ এ প্রস্তাব মেনে চললেও কয়েক সপ্তাহ আগে মিয়ানমারের একটি সরকারি রিপোর্টে রোহিঙ্গাদেরকে ‘বাঙালি’ হিসাবে অভিহিত করা হয়।

মিয়ানমারের বিশেষ দূত চাও তিনকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে আগে থেকে প্রায় তিন লাখ অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা বসবাস করলেও গত তিন মাসে ৬৫ হাজার রোহিঙ্গা নতুনভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

এ জাতীয় আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2023 Mohajog