প্রতিবেদক : খুনি সন্দেহে গ্রেপ্তার দুই শিশুকে আদালতে হাজির করতে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। একজন পদস্থ কর্মকর্তার মাধ্যমে আগামী ২৯ জানুয়ারি ওই দুই শিশুকে আদালতে হাজির করতে হবে। আর আদালতের এই আদেশ বাস্তবায়ন করবেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার।
দুই শিশুর বয়স নির্ণয় সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাই কোর্ট বেঞ্চ রোববার এ আদেশ দেয়।
রিট আবেদনকারী সংগঠন চিলড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মো. আব্দুল হালিম নিজেই এদিন শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।
পরে আব্দুল হালিম সাংবাদিকদের বলেন, গত বছরের ২৪ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে ‘লাশের পরিচয় মেলেনি, খুনি সন্দেহে ২ শিশু গ্রেপ্তার’ শিরোনামে একটি প্রতেবদন প্রকাশিত হয়। তা যুক্ত করে এই রিট আবেদন করা হয়েছিল।
প্রাথমিক শুরু করে আদালত গত ২৯ নভেম্বর রুল জারি করে। পাশাপাশি ওই দুই শিশুর বয়স নির্ণয় করা হয়েছে কিনা- সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয়।
আদালতের নির্দেশের পর পুলিশ ওই দুই শিশুর বয়স নির্ণয়ে ব্যবস্থা নেয়। গত ৪ জানুয়ারি লালবাগের ডিসি ও কামরাঙ্গীচরের ওসি আদালতে প্রতিবেদন দেন।
আব্দুল হালিম বলেন, তারা পুলিশের ওই দুই কর্মকর্তাকে তলব করার আবেদন করেছিলেন। বিচারক পুলিশ কর্মকর্তাদের না ডেকে দুই শিশুকে হাজিরের নির্দেশ দিয়েছেন।
দুই শিশুকে গ্রেপ্তার করা কেন শিশু আইনের ১৩, ১৪, ৪৪, ৪৫, ৪৭ ও ৫২ ধারার পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়েছে হাই কোর্টের রুলে।
সেই সঙ্গে দুই শিশুর পরিবারকে কেন ২০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না তাও জানাতে বলেছে আদালত।
স্বরাষ্ট্র সচিব, ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম, পুলিশ মহাপরিদর্শক, ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার, লালবাগ বিভাগের উপ কমিশনার ও কামরাঙ্গীর চরথানার ওসিকে এই রুলের জবাব দিতে হবে।
গত বছরের ২৪ নভেম্বর দৈনিক প্রথম আলোতে এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সেপ্টেম্বরে পুলিশ অজ্ঞাতপরিচয় এক শিশুর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছিল। ১০ দিন পর লাশটি নিখোঁজ এক শিশুর দাবি করে তার পরিবার খুনের মামলা করে।
খুনি সন্দেহে সে সময় পুলিশ দুই শিশুকে গ্রেপ্তার করে। বিচারিক হাকিম জবানবন্দি নিয়ে তাদের টঙ্গীর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠান।
শিশু আইন ২০১৩-এর ৪৪/১ ধারা অনুযায়ী, নয় বছরের কম বয়সী কোনো শিশুকে গ্রেপ্তার কিংবা আটক করা যায় না। মামলার এজাহারে শিশু দুটির বয়স বলা হয়েছে ১২ বছর।
কিন্তু অভিভাবকরা বলছেন, তাদের বয়স নয় বছরের কম। এর পক্ষে আদালতে জন্মসনদ দাখিল করে এক শিশুর অব্যাহতি চাওয়া হয়েছে। ওই সনদে বলা হয়েছে ছেলেটির জন্ম তারিখ ২০০৮ সালের ২৯ জানুয়ারি।