প্রতিবেদক : তথ্যপ্রযুক্তি আইনে এক তরুণীর দায়ের করা মামলায় জাতীয় দলের ক্রিকেটার আরাফাত সানিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গত ৫ জানুয়ারি এক তরুণীর করা দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে রোববার তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার এসআই ইয়াহিয়া রোববার সানিকে ঢাকার হাকিম আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।
আরাফাত সানির সঙ্গে বেশ কয়েক বছর ধরে সম্পর্ক বলে ওই তরুণীর দাবি। তারা পরিবারকে না জানিয়ে বিয়েও করেন। সম্প্রতি তুলে নেওয়ার কথা বললে সানি ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে ফেইসবুকে তার অশ্লীল ছবি আপলোড করেন।” ওই অভিযোগের ভিত্তিতে রোববার সকাল ৮টার দিকে আমিন-বাজারের বাসা থেকে পুলিশ আরাফাত সানিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আরাফাত সানির আইনজীবী রকিবুল ইসলাম এই রিমান্ডের বিরোধিতা করেন। অন্যদিকে বাদীপক্ষের আইনজীবী জুয়েল আহমেদ এর বিরোধিতা করেন। পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন জানান, হাকিম আদালত তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় জামিন দেওয়ার এখতিয়ার রাখে না। আসামি জামিন চাইলে তাকে সাইবার ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে হবে।
মামলার এজাহারের তথ্য অনুযায়ী, ২৩ বছর বয়সী ওই তরুণীর বাসা মোহাম্মদপুরের কাটাসুর এলাকায়। মেয়েটির দাবি, সাত বছর আগে সানির সঙ্গে তার পরিচয় ও প্রেম হয়। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে তারা পরিবারকে না জানিয়ে বিয়ে করেন।
এরপর বিয়ের বিষয়টি পরিবারকে জানিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে নেওয়ার কথা বললেও সানি সময় ক্ষেপণ করতে থাকেন বলে ওই তরুণীর অভিযোগ।
মামলার এজাহারে বলা হয়, পরিবার থেকে বিয়ের জন্য চাপ থাকায় ওই তরুণী সানিকে বলেন, হয় তাকে তুলে নেওয়া হোক, না হলে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছেদের ব্যবস্থা করা হোক।
এরপর গত বছর জুন মাসে সানি ফেইসবুকে একটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে মেসেঞ্জারের মাধ্যমে তাদের কিছু অন্তরঙ্গ ছবি এবং ওই তরুণীর কয়েকটি ছবি তাকে পাঠান এবং নানাভাবে হুমকি দিতে শুরু করেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে এজাহারে।
থানার বাইরে আরাফাত সানির মা থানার বাইরে আরাফাত সানির মা তবে ৩০ বছর বয়সী সানির মা নার্গিস আক্তার মোহাম্মদপুর থানার সামনে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, তার ছেলে কোনো অপরাধ করেনি। টাকার লোভে ওই মেয়ে তাকে ‘ফাঁসানোর’ চেষ্টা করছে।
ওই তরুণী সানির সঙ্গে বিয়ের দাবি করলেও কোনো কাবিননামা দেখাতে পারেনি বলে দাবি করেন নার্গিস।
বাংলাদেশ জাতীয় দলে বাঁহাতি স্পিনার সানির অভিষেক হয় ২০১৪ সালে। দেশের হয়ে সর্বশেষ তিনি খেলেছেন গতবছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। তার আগে ২০১৫ সালের নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে দেশের হয়ে শেষ ওয়ানডে খেলেন।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের কারণে তাসকিন আহমেদের সঙ্গে আরাফাত সানিকেও নিষিদ্ধ করে আইসিসি।
বোলিং অ্যাকশন সংশোধনের পর এখনও জাতীয় দলে ফেরা হয়নি সানির। গত বছরের শেষ দিকে রংপুর রাইডার্সের হয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে অংশ নেন তিনি। শ্রীলঙ্কার দিনুকা হেতিয়ারাচ্চির পর দ্বিতীয় বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে শূন্য রানে ৩ উইকেট নিয়ে তিনি আলোচনাতেও এসেছিলেন।
আরাফাত সানির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিসিবির মিডিয়া কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস বলেন, “আমরা এখনো পুরো ব্যাপারটা জানি না। আইসিটি অ্যাক্টে সানিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা ভিতরের ব্যাপারটা জানার চেষ্টা করছি। এরপর মন্তব্য করতে পারব।”