আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে ‘সর্বশক্তি’ দিয়ে লড়াই করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিয়ন্ত্রণাধীন হোয়াইট হাউস। সংবাদ মাধ্যমের ‘অন্যায্য আক্রমণের’ বিরুদ্ধে এই লড়াই বলে রোববার জানিয়েছে তারা।
পূর্ণ দিবস প্রেসিডেন্টের দায়িত্বপালনের প্রথম দিন, শনিবার ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে ‘লড়াই করছেন’। শুক্রবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের অভিষেকের সময় জনতার উপস্থিতিকে সাংবাদিকরা ‘খাটো’ করে দেখিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে, ট্রাম্প ও তার হোয়াইট হাউস কর্মকর্তাদের মনোভাব হোয়াইট হাউস ও সাংবাদিকদের মধ্যকার ঐতিহ্যগত দ্বান্দ্বিক সম্পর্ককে আরো কঠোর করে তুলছে।
হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের প্রথম ছুটির দিনগুলো গণমাধ্যমের সঙ্গে খোঁচখুঁচি করেই পার হয়েছে। এই বিষয়টি ট্রাম্পের নীতি ও মন্ত্রীপরিষদে তার নিয়োগজনিত বিতর্ককে ছাপিয়ে গেছে।
নতুন প্রেসিডেন্টের প্রথম সিআইএ-র সদরদপ্তর পরিদর্শনকালেও এই বিষয়টিই প্রাধান্য পেয়েছে, তার তথ্যমন্ত্রীর প্রথম সংবাদ সম্মেলন এবং রোববারের টকশোগুলোতে তার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের কথাবার্তায়ও বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে।
‘ফক্স নিউজ সানডে’ অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের চিফ অব স্টাফ রাইনস প্রিবাস বলেছেন, “উপস্থিত জনতার আকার বিষয় না, বিষয় হচ্ছে আক্রমণ এবং একদিনেই প্রেসিডেন্টকে অগ্রহণযোগ্য করার উদ্যোগ। এটি করবে আর আমরা চুপ করে বসে থাকবো, তা হবে না।”
দায়িত্ব নেওয়ার পর শনিবার নিজের প্রথম সংবাদ সম্মেলনে স্পাইসার অভিযোগ করে বলেছিলেন, শুক্রবার ট্রাম্পের অভিষেকের সময় ন্যাশনাল মলে জনতার উপস্থিতি সত্যিকারভাবে যা ছিল, গণমাধ্যমগুলো কারসাজি করে তার থেকে কম দেখিয়েছে।
ট্রাম্পের অভিষেকের সময় উপস্থিতি জনতার সংখ্যাকে ‘এ পর্যন্ত সর্ববৃহৎ’ বলেও দাবি করেন স্পাইসার।
কিন্তু রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উপর থেকে তোলা সব ছবিতে দেখা গেছে, ট্রাম্পের অভিষেকের সময় জনতার উপস্থিতি ২০০৯ সালে বারাক ওবামার অভিষেকের তুলনায় অনেক কম ছিল।
জনসমাবেশে জনতার উপস্থিতি গণনাকারী বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃতি দিয়ে অন্যান্য গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলোতেও স্পাইসারের এই বিবৃতিকে ব্যাপকভাবে চ্যালেঞ্জ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে এই তার এই দাবিকে বিভিন্নভাবে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করা হয়।
এনবিসি-র ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে হোয়াইট হাউসের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ক্যালিয়ানি কনওয়েকে জিজ্ঞেস করা হয়, তথ্যমন্ত্রী এই ধরনের পুরোপুরি মিথ্যা বিবৃতি কেন দিলেন।
এর জবাবে পাল্টা আক্রমণ করে কনওয়ে বলেন, “যদি আমাদের তথ্যমন্ত্রী সম্পর্কে এই ধরনের কথা বলা অব্যাহত থাকে তাহলে এখানকার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আমরা পুনর্বিবেচনা করবো বলে আমি মনে করি।”
তারা সবাই মিলে পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন, ট্রাম্পের নিউজ কভার করা সংবাদ মাধ্যমগুলোর বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসন কঠোর অবস্থান অব্যাহত রাখবে।