প্রতিবেদক : নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটির দেয়া তালিকা থেকে নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে সাবেক সচিব কেএম নুরুল হুদাকে নিয়োগ দিয়েছেন। সোমবার রাতেই তার নিয়োগ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এছাড়াও নবগঠিত ইসির কমিশনার হিসেবে সাবেক সচিব রফিকুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ কবিতা খানম এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী নিয়োগ পেয়েছেন। নবগঠিত এ ইসির অধীনেই আগামী সংসদ নির্বাচন হবে।
বিসিএস ১৯৭৩ সালের একজন সদস্য হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন কেএম নুরুল হুদা। সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তিনি ফরিদপুরের চরভদ্রাসন, গোপালগঞ্জের মকছুদপুরে থানা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর মাগুরা ও যশোরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি উপ-সচিব পদে পদোন্নতি পান কেএম নুরুল হুদা।
এরপর ফরিদপুর ও কুমিল্লার জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালকেরও দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এরপর ১৯৯৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি সরকারের যুগ্ম সচিব হন। এরপর জাতীয় সংসদ সচিবালয় এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবের দায়িত্বে ছিলেন নুরুল হুদা। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালনের সময়ে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে ২০০১ সালের ৮ ডিসেম্বর তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়।
এরপর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসে ২০০৯ সালে তাকে চাকরিতে ফিরিয়ে এনে ভুতাপেক্ষ পদোন্নতি দেয়। সেসময় তাকে অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে ভুতাপেক্ষ পদোন্নতি দেয়ায় কোনো মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব দেয়া হয়নি।
এরপর কর্মজীবনে ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশ মিউনিসিপাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের (বিএমডিএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে ছিলেন পাঁচ বছর। এর আগে জেমকন গ্রুপের পরিচালক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ), নর্থ ওয়েস্ট জোন কোম্পানির চেয়ারম্যান বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি।
জন্ম ও শিক্ষা: ১৯৪৮ সালে পটুয়াখালীর বাউফলে জন্মগ্রহণ করেন কেএম নুরুল হুদা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন নতুন সিইসি। এছাড়াও ১৯৭২-৭৩ সালে হল ছাত্র সংসদে সাংস্কৃতিক সম্পাদক ছিলেন নুরুল হুদা। যুক্তরাজ্যের ম্যানচেষ্টার ইউনিভর্সিটি ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নেন তিনি।
মেজর জলিলের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ: স্বাধীনতা যুদ্ধে ৯ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে পটুয়াখালী জেলা পাক হানাদার মুক্ত করায় ভূমিকা রাখেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্রাবস্থায় বরিশাল অঞ্চলে মেজর জলিলের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
সংসার জীবন: স্ত্রী হুসনে আরার সঙ্গে নুরুল হুদার সংসারে তিন ছেলে-মেয়ে। বড় ছেলে প্রকৌশলী, কানাডায় রয়েছেন। মেজ মেয়ে বুয়েট থেকে পাস করে পিএইচডি শেষে যুক্তরাষ্ট্রের মিসিগানে থাকেন। ছোট মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠ চুকিয়ে উচ্চতর ডিগ্রির জন্য কানাডায় আছেন।