প্রতিবেদক : জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালতের বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে করা খালেদা জিয়ার আবেদনের ওপর আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি শুনানির দিন ঠিক করেছে হাই কোর্ট।
খালেদার আইনজীবীদের সময় আবেদনের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের বেঞ্চ শুনানির এই তারিখ নির্ধারণ করে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল। অপরদিকে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
পরে ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা আদালতের কাছে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় চেয়েছিলাম। আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে নতুন এই দিন নির্ধারণ করেছেন।”
অপরদিকে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, “উনারা মামলার বিচারকে বিলম্বিত করার জন্যই সময় আবেদন করেছেন। আদালত ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় মঞ্জুর করেছেন। সেদিনই আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।”
তিনি বলেন, জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালতে সাফাই সাক্ষী হিসেবে ১০ জনকে নির্ধারণ করে দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একটি রিভিশন আবেদন করেছেন ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার এপিএস নুরুল ইসলাম খান। একই দিনে ওই আবেদনেরও শুনানি হবে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে হাই কোর্টে আবেদন করেন খালেদা জিয়া।
মামলাটি ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদারের আদালতে বিচারাধীন। আবেদনে মামলাটি অন্য আদালতে স্থানান্তরের আরজি জানানো হয়।
সেদিন আবেদন করার পর খালেদা জিয়ার আরেক আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, একই আদালতে বিচারাধীন অন্য মামলার ক্ষেত্রে এক থেকে দেড়মাস পর পর তারিখ নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু খালেদা জিয়ার মামলায় কোনো কোনো সপ্তাহে দুইবারও তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
“তাই এ আদালতে তার ন্যায় বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণেই এ আদালতের প্রতি তিনি অনাস্থা জানিয়েছেন।”
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর হাই কোর্ট বেঞ্চে আবেদনের ওপর শুনানি হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু এরই মধ্যে আদালতের এখতিয়ার পরিবর্তন হওয়ায় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে শুনানির জন্য আবেদন করেন খালেদার আইনজীবীরা।
মামলার বিবরণীতে জানা যায়, ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। এতিমদের সহায়তার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে এ মামলা করা হয়।
খালেদা ছাড়াও এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক সাংসদ ও ব্যবসায়ী কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও জিয়াউর রহমানের বোনের ছেলে মমিনুর রহমান।