1. sardardhaka@yahoo.com : adminmoha :
সোমবার, ২০ মার্চ ২০২৩, ০৭:২৬ অপরাহ্ন

নতুন ব্যাংক নতুন কিছু করছে না

মহাযুগ নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭
  • ১৯৮ বার

প্রতিবেদক : দেশে ব্যাংকের সংখ্যা বাড়লেও নতুন ব্যাংকগুলো গতানুগতিকভাবে কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি মনে করেন, নতুন ব্যাংকগুলো আগের ব্যাংকের মতোই টাকাওয়ালাদের ঋণ দিচ্ছে। তারা নতুন পণ্য ও সেবা এনে ব্যাংকিংয়ের বাইরে থাকা জনগোষ্ঠীকে আওতায় আনার দিকে মনোযোগী নয়।
সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) দ্বিতীয় বার্ষিক অর্থনীতিবিদ সম্মেলনে তথ্যপ্রযুক্তি ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিয়ে একটি অধিবেশনে তিনি বলেন, ‘আর্থিক অন্তর্ভুক্তি মানে হলো সরকার এ ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণগত বাধা দূর করবে, বেসরকারি খাত নতুন পণ্য আনবে। সেগুলো সুলভ মূল্যের হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, নতুন ব্যাংকগুলো নতুন কিছু করছে না।’
সালেহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ৪৭টা ব্যাংক ছিল, ৫৬টা হয়েছে, আরও ১০টা হবে। তারা একই জিনিস করতে থাকবে। যাদের টাকা আছে, তাদের কােছ যাবে। তাদের বলবে টাকা নিয়ে যাও। ফেরত দিতে না পারলে পুনঃতফসিল করো। জামানত দাও।
সাবেক ওই গভর্নর আরও বলেন, ‘ব্যাংকাররা উদ্যোগী না হলে, তাঁদের মানসিকতার পরিবর্তন না করলে আমরা ডিজিটালাইজেশন বা তথ্যপ্রযুক্তি দিয়ে এগোতে পারব না। ব্যাংকিং খাতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। তবে সেটার লক্ষ্যের বিষয়ে সবাইকে একমত হতে হবে। লক্ষ্যটি হতে হবে, আমরা ব্যাংকিংয়ের বাইরে থাকা মানুষদের আওতায় নিয়ে আসব।’
সানেমের দুই দিনের ওই সম্মেলনটি গতকাল রোববার শেষ হয়েছে। রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত এ সম্মেলনে গতকাল উৎপাদনশীলতা ও প্রবৃদ্ধি, সহজে ব্যবসা করা, জলবায়ু পরিবর্তন ও অভিবাসন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে পাঁচটি অধিবেশন হয়। আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিয়ে অধিবেশনটি আয়োজন করা হয় ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) ও ইন্টারন্যাশনাল গ্রোথ সেন্টারের (আইজিসি) অংশীদারত্বে।
এ অধিবেশনে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে লেনদেনের ব্যয় কমানোর বিষয়টিও আলোচনা হয়। অন্যদিকে মুঠোফোন ব্যবহার করে আর্থিক সেবার (এমএফএস) ক্ষেত্রে কোন মডেল অনুসরণ করা হবে, মুঠোফোন অপারেটরগুলো কী নেতৃত্ব দেবে, নাকি ব্যাংকগুলো শুধু এ সেবা দেবে, তা নিয়েও বিতর্ক হয়।
এমএফএস প্রতিষ্ঠান বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কামাল এস কাদির বলেন, বিকাশে টাকা উত্তোলন করতে ১০০ টাকায় যে ১ টাকা ৮৫ পয়সা নেওয়া হয় তার মধ্যে ৭৭ শতাংশ এজেন্ট, ৭ শতাংশ মুঠোফোন অপারেটর ও বাকি ১৬ শতাংশ বিকাশ পায়। এজেন্টের কমিশন আগে ৮৫ শতাংশ ছিল। তিনি বলেন, এজেন্টকে তার বিনিয়োগের বিপরীতে পর্যাপ্ত লাভ দিতে না পারলে তাদের আগ্রহ থাকবে না। এতে পুরো ব্যবস্থা ধসে পড়বে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) মহাপরিচালক তৌফিক এ চৌধুরী বলেন, ব্যয় কমাতে হবে। সেটা কীভাবে তা সাধারণ মানুষের বিবেচনার বিষয় নয়। সাধারণ মানুষের পক্ষে এত ব্যয় সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘এখন হয়তো বলা হবে মানুষ তো টাকা দিচ্ছে। কিন্তু তারা দিচ্ছে মানে এই নয় যে তাদের এত ব্যয়ের সক্ষমতা আছে।’
আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে লেনদেনের ব্যয় কমানোর বিষয়ে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এখানে কম খরচে দ্রুত ও মানসম্পন্ন সেবা দিতে হবে। ব্যাংকিং সেবা নিয়ে অনেক অভিযোগ আছে। ব্যাংক অনেক সুসজ্জিত থাকে, চিত্রকর্ম থাকে, এটা-সেটা থাকে। কিন্তু ভেতরে গেলে চার ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। ব্যাংক তো জাদুঘর নয়!’
পাই স্ট্র্যাটেজি কনসালটিং নামের একটি প্রতিষ্ঠানের অংশীদার পিয়াল ইসলাম বলেন, এমএফএস সেবা এখন সারা বিশ্বে মিশ্রভাবে হচ্ছে। এটা এখন আর শুধু ব্যাংক বা মুঠোফোন অপারেটরদের এক পক্ষের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্পের পরামর্শক আনির চৌধুরী সাধারণ মানুষকে আর্থিক সেবার মধ্যে নিয়ে আসতে নেওয়া উদ্যোগগুলোর কথা জানান।
এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা এম আনোয়ারুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।

এ জাতীয় আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 Mohajog