প্রতিবেদক : সিলেটে কলেজ ছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিস হত্যাচেষ্টা মামলা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত থেকে মহানগর দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়েছে। বুধবার রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে মুখ্য মহানগর হাকিম সাইফুজ্জামান হিরো মামলাটি স্থানান্তরের এ আদেশ দেন।
গত ৩ অক্টোবর সিলেটে এ হামলার পর দণ্ডবিধির ৩০৭, ৩২৪ ও ৩২৬ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।
আদালতের অতিরিক্ত পিপি মাহফুজুর রহমান জানান, হাকিম আদালত আলোচিত এ মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের কথা ছিল। কিন্তু মামলার তিনটি ধারার মধ্যে একটির সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার এখতিয়ার এ আদালতে না থাকায় দায়রা আদালতে বদলি করা হয়।
আগামী পাঁচ মার্চ মহানগর দায়রা জজ আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হবে। ওই দিনই মামলার রায়ের তারিখ ঠিক করা হবে বলে জানান তিনি।
গত ৩ অক্টোবর সিলেটের এমসি কলেজ কেন্দ্রে স্নাতক পরীক্ষা দিয়ে বের হয়ে হামলার শিকার হন সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক (পাস কোর্স) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী খাদিজা। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলমের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার মাথার খুলি ভেদে করে মস্তিষ্কও জখম হয়।
হামলার পর ঢাকায় এনে স্কয়ার হাসপাতালে ৪ অক্টোবর বিকালে খাদিজার অস্ত্রোপচার করে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। পরে ১৩ অক্টোবর তার লাইফ সাপোর্ট খোলার পর ‘মাসল চেইন’ কেটে যাওয়া তার ডান হাতে অস্ত্রোপচার করা হয়।
ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে তিন দফা অস্ত্রোপচারের পর শরীরের বাঁ পাশ স্বাভাবিক সাড়া না দেওয়ায় চিকিৎসার জন্য স্কয়ার থেকে সাভারের সিআরপিতে পাঠানো হয়।
সিআরপিতে তিন মাসের চিকিৎসা শেষে ২৪ ফেব্রুয়ারি বাড়ি ফেরেন কলেজ খাদিজা।
খাদিজার ওপর হামলাকারী বদরুলকে ঘটনাস্থল থেকে ধরে তখনই পুলিশে দেয় জনতা। ঘটনার পরদিন খাদিজার চাচা আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে শাহপরান থানায় মামলা করেন। বদরুলকে বিশ্ববিদ্যালয় ও সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।
মামলার তদন্তে নেমে খাদিজাকে কোপানোর ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। বদরুল নিজেও অপরাধ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহ পরান থানার এসআই হারুনুর রশিদ ৮ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেন। সেখানে ৩৬ জনকে সাক্ষী করা হয়। এর মধ্যে আদালত খাদিজাসহ ৩৪ জনের জবানবন্দি শুনেছে।
২৯ নভেম্বর বদরুল আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচার শুরু হয়।