প্রতিবেদক: সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে গ্রীক দেবীর মূর্তি অপসারনের দাবীতে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে পড়েছে ব্রাহ্মনবাড়িয়া। প্রচণ্ড বিক্ষোভে কার্যত অচল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর। হাজার হাজার মানুষের বিক্ষোভে শহর জুড়ে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
বিক্ষোভের কারনে ঢাকা-চট্রগ্রাম, ঢাকা-সিলেট রেলপথে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। সড়ক পথে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কেও যানবাহন চলাচল বেশ কিছুক্ষন বন্ধ থাকে। শহরের প্রধান সড়ক টি.এ রোড সকাল ১০ টার পর থেকে জনস্রোতে বন্ধ হয়ে যায়। কোনো যানবাহন চলাচলের সুযোগ ছিল না এ সড়ক দিয়ে। এ সড়ক দিয়ে ছিল শুধু মানুষ আর মানুষ। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক, অলিগলি সবকিছুই বিক্ষোভকারীদের দখলে চলে যায়।
মিছিলকারীদের শ্লোগানে কম্পিত হয়ে ওঠে গোটা শহর। প্রায় দেড় ঘন্টা ধরে টি. এ রোড, হাসপাতাল রোড, মঠের গোড়া, টেংকের পাড় সড়কে সকল প্রকার যাবাহন চলাচল বন্ধ থাকে রাজপথে উপচে পড়া জনস্রোতে।
বৃহস্পতিবার হেফাজতে ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখা এ বিক্ষোভের আয়োজন করে। গত কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ সফল করতে আহ্বান জানানো হয়।
এ দিন বিক্ষোভে অংশ নেয় জেলার সবকটি উপজেলা থেকে আসা সাধারন মানুষ। বাস, ট্রাক, নৌকায় করে সাধারন মানুষ গ্রাম থেকে এসে বিক্ষোভে যোগ দেয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা। সকাল প্রায় সাড়ে ১১টার দিকে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করে টেংকের পাড় মাঠে জমায়েত হয়।
এ সময় সেখানে মানুষের তিল ধারনের ঠাইও ছিল না। বিভিন্ন ব্যানার, ফেষ্টুন ব্যবহার করে বিক্ষোভ কারীরা। প্রায় অর্ধ লক্ষ লোক তাতে অংশ গ্রহন করে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
টেংকের পাড় আব্দুল কুদ্দুস মাখন মুক্ত মঞ্চ প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কাউতলী গোলচত্বরে গিয়ে সমাবেশ করে। মিছিলটি কাউতলীতে যাবার পরও শেষের অংশ ছিল রেলগেইটের সামনে। মিছিলে জেলার প্রবীন মাওলানা আশেকে এলাহী ইব্রাহিমীসহ শীর্ষ আলেম ওলামারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে সমাবেশে সভাপত্বি করেন আল্লামা মনিরুজ্জামান সিরাজী। বক্তব্য রাখেন হেফাজত ইসলামের সিনিয়র সহ-সভাপতি আল্লামা সাজেদুর রহমান, সহ-সভাপতি মুুফতি নোমান হাফেজি, সাধারন সম্পাদক মুফতি মোবারক উল্লাহ, ইসলামী ঐক্যজোটের জেলা সম্পাদক সম্পাদক হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ ইদ্রিস, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি মোহাম্মদ এনামুল হাসানসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন, মূর্তি নয়- আল কোরআনই ন্যায় বিচারের প্রতীক। তারা অবিলম্বে সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে গ্রীক দেবীর মূর্তি অপসারনের দাবী জানান। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন।