প্রতিবেদক: দিনাজপুরের কথিত পীর ফরহাদ হোসেন হত্যায় সরাসরি অংশ নেওয়ার অভিযোগে তারই এক মুরিদকে কুড়িগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
সোমবার সকালে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার জয়মনিরহাট বাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে রংপুরের র্যাব-১৩-এর অধিনায়ক কমান্ডার এ টি এম আতিকুল্যাহ জানান।
গ্রেপ্তার শফিকুল ইসলাম বাবু (২৮) দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার দৌলা শাহপাড়া আজিম উদ্দিন শাহর ছেলে।
গত ১৩ মার্চ রাতে দিনাজপুরের বোচাগঞ্জের দৌলাগ্রামের কাদরিয়া মোহাম্মদিয়া দরবার শরীফের কথিত পীর ফরহাদ হোসেন চৌধুরী ও তার গৃহকর্মী রুপালিকে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এর দুই দিন পর ফরহাদের মেয়ে ফাতিয়া ফারহানার করা মামলা কুড়িগ্রামের উলিপুরের কথিত পীর ইসহাক ও দরবার শরীফের খাদেম সায়েদুল ইসলাম ও মুরিদ সমর আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
র্যাব কর্মকর্তা আতিকুল্যাহ সাংবাদিকদের বলেন, কুড়িগ্রামের পীর ইসহাক দিনাজপুর এসে বাবুর বাসায় থাকতেন।
“সেখানেই দিনাজপুরের পীর ফরহাদকে হত্যার পরিকল্পনা হয়। শফিকুল ইসলাম বাবুসহ পাঁচজন হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়। কুড়িগ্রামের পীর ইসহাক বাবুকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, বাবু ফরহাদকে হত্যা করতে পারলে তাকে একটি খেলাফতের দায়িত্ব দেওয়া হবে।”
এ আগে শুক্রবার রাতে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) হামিদুল আলম এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ফরহাদ চৌধুরীকে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে তার ‘গুরু’ কুড়িগ্রামের কথিত পীর ইসহাক আলী ও কাদরিয়া মোহাম্মদিয়া দরবার শরীফের খাদেম সায়েদুল দিনাজপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
‘গুরু-শিষ্যের আদর্শিক দ্বন্দ্বের জেরে’ এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে দাবি করে এসপি হামিদুল সেদিন বলেন, “গত ১২ মার্চ কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে পীর ইসহাক আলীর দরবারে হত্যার পরিকল্পনা হয় । এ কিলিং মিশনে সাত জন অংশ নেয়।
“ফরহাদ চৌধুরী ও রুপালিকে প্রথমে বালিশ চাপা দিয়ে নিস্তেজ করা হয় এরপর তাদের গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে খুনিরা।”
দ্বন্দ্বের বিষয়ে হামিদুল বলেন, ২০০৮ সালে ইসহাক ইউপি নির্বাচনে নিজের এলাকায় সদস্য প্রার্থী হন। নির্বাচনের জন্য তিনি শিষ্য ফরহাদের কাছে টাকা চাইলে তিনি তা দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং নির্বাচনে বিরোধিতা করেন। পরে তা আদর্শিক দ্বন্দ্বের রূপ পায়।
ইসহাক খাদেম সায়েদুলকে ‘কৌশলে’ এ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করেন বলেও পুলিশের ভাষ্য।