প্রতিবেদক: ব্রাজিলে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েসের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তার মরদেহ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে।
সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চত্বরে তার অনুষ্ঠিত হবে। জানাজায় অংশ নেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক এবং সাবেক ও বর্তমান রাষ্টদূতরা ছাড়াও তার সহকর্মীরা।
এর আগে রবিবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে তার মরদেহ কাতার এয়ার লাইনসের একটি ফ্লাইটে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। এসময় তার মরদেহ গ্রহণ করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এরপর মিজারুলের মরহদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বনানী জি ব্লকের ৯ নম্বর রোডের ২৮ নম্বর বাড়িতে। সেখানে আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, শুভাকাঙ্ক্ষীরা শেষ শ্রদ্ধা জানান। মরহুমের সঙ্গে তার স্ত্রী ও সন্তানরাও দেশে ফিরেছেন।
বাদ আছর গুলশান আজাদ মসজিদে তৃতীয় জানাজা শেষে মিজারুল কায়েসের কফিন জন্মস্থান কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে তার আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা চতুর্থ জানাজায় অংশ নেবেন।
১৫ মার্চ ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় মিজারুলের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ব্রাজিলে নিযুক্ত মুসলিম দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতরা ওই জানাজার আয়োজন করেন। এর আগে তাকে সামরিক মর্যাদায় সম্মান জানায় ব্রাজিল সরকার।
শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ার একটি হাসপাতালে মাসখানেক ধরে আইসিইউতে ভর্তি থাকার পর গত ১১ মার্চ মিজারুল কায়েস মারা যান। তিনি স্ত্রী নাইমা চৌধুরী ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন।
মিজারুল কায়েসের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর আগে ২০১২ সালে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ও রক্তে ইনফেকশনের মতো প্রাণঘাতী সেপটেসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে সুস্থ হয়ে দেশে ফেরেন তিনি।
মালদ্বীপ ও রাশিয়ায় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালনের পর ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মিজারুল। এর তিন বছর পর তিনি যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাই কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন। সেখানে তার কার্যক্রম বিতর্কের সৃষ্টি করলে ২০১৪ সালে রাষ্ট্রদূত করে ব্রজিলে পাঠানো হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড কেনেডি স্কুল অব গভর্নমেন্টে পড়াশোনা করা মিজারুল বিসিএসে ১৯৮৪ ব্যাচের কর্মকর্তা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গুরুত্বপূর্ণ নানা পদে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনস্টিটিউটেও তিনি পড়িয়েছিলেন।