প্রতিবেদক : ভুল তথ্য দিয়ে হৃদযন্ত্রে রিং বসাতে (এনজিওপ্লাস্টি) রোগীকে বাধ্য করার চেষ্টার অভিযোগে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের এক চিকিৎসকসহ দুজনকে তলব করেছে আদালত।
মঙ্গলবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে কাওলা দক্ষিণখানের বাসিন্দা মো. কামরুজ্জামান কামরুলের করা মামলায় মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনসারী এ আদেশ দেন। আসামিরা হলেন- উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান রাকিবুল ইসলাম লিটু (৪৫) ও উত্তরার লুবানা জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ মো. জহুরুল ইসলাম।
বিচারক আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে তাদেরকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে বাদির আইনজীবী মঞ্জুরুল আহসান জানিয়েছেন।
লুবানা হাসপাতালে করা এনজিওগ্রামের রিপোর্টে হৃদযন্ত্রে ব্লকের পরিমাণ ‘প্রতারণামূলকভাবে’ বেশি দেখিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে আসামিরা রিং বসানোর উদ্যোগ নেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
ঘটনার বিবরণে আরজিতে বলা হয়, ৩৮ বছর বয়সী বাদী কামরুল ২৬ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টার দিকে বুকে ব্যথা ও চাপ অনুভব করলে উত্তরার সোনারগাঁও জনপদে অবস্থিত উত্তরা আধুনিক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাৎক্ষণিকভাবে তার ইসিজি করে ডা. রাকিবুলের তত্ত্বাবধানে ভর্তি করে নেন।
পরদিন আবার ইসিজির সঙ্গে হেমাটোলজি ও বায়োকেমিক্যাল ও ইকো কালার ডপলার পরীক্ষা করেন। ওই দিনই বিকাল ৪টায় রিপোর্ট পাওয়ার পর রাকিবুল রোগীর লোকজনকে নিজের কক্ষে ডেকে নিয়ে ‘হৃদযন্ত্রে সমস্যা থাকায় এনজিওগ্রাম করতে হবে’ বলেন।
ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত ‘কম খরচে উন্নত চিকিৎসার’ কথা বলে রোগীকে লুবানা জেনারেল হাসপাতালে যেতে বলে ওই চিকিৎসক। কামরুল ওই দিনই সেখানে ভর্তি হলে রাকিবুল নিজেই তার এনজিওগ্রাম করেন।
পরে তিনি রোগীর স্বজনদের বলেন, রোগীর হৃদযন্ত্রে ব্লকের পরিমাণ ৯০ শতাংশ, জরুরি ভিত্তিতে রিং না বসালে বিপদ হবে, এমনকি রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
ওই দুই আসামি রিংয়ের দাম এবং আনুষঙ্গিক চিকিৎসা সেবাসহ রোগীর স্বজনদের কাছে ৩ লাখ টাকা দাবি করেন। কিন্তু রোগীর স্বজনরা রিং বসাতে সম্মত না হলে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।
পরে রোগী শেরে বাংলানগরে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের হাসপাতালে ভর্তি হলে এনজিওগ্রাম রিপোর্ট দেখে সেখানকার চিকিৎসক অধ্যাপক এম আক্তার আলী বলেন, ব্লকের পরিমাণ এতো সামান্য যে আদৌ রিং বসানোর দরকার নেই।
বাদির আইনজীবী মঞ্জুরুল বলেন, “আসামিরা বাদি ও তার আত্মীয়স্বজনকে মারাত্মক রকমের হেনস্থা করেন; তারা ভয়ভীতি দেখান এবং গালিগালাজও করেন।”