প্রতিবেদক: কাশিমপুর কারাগারের জেল সুপারের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ খানের কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়েছেন জঙ্গিনেতা মুফতি হান্নান।
ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর উপর গ্রেনেড হামলার চূড়ান্ত রায়েও মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত এই হুজি নেতা বর্তমানে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন।
সোমবার সন্ধ্যায় তিনি প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন বলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপার মো. মিজানুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।
এই আবেদন রাষ্ট্রপতি নাকচ করে দিলে মুফতি হান্নানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে আর কোনো বাধা থাকবে না; তার প্রস্তুতি রয়েছে বলে কারা কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে জানিয়েছে।
মুফতি হান্নানের সহযোগী একই কারাগারে বন্দি শরীফ শাহেদুল বিপুলও প্রাণভিক্ষা চাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান কারা কর্মকর্তা।
মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল খারিজের পর রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছিলেন মুফতি হান্নান। গত রোববার সেই রিভিউ আবেদন খারিজের পরই তার দণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি শুরু হয়।
জেলসুপার মিজানুর জানান, রিভিউ খারিজের অনুলিপি ২১ মার্চ মধ্যরাতে কারাগারে আসে, পরদিন তা মুফতি হান্নানকে পড়ে শোনানো হয়। সিলেট কারাগার থেকে আসা মৃত্যু পরোয়ানাও পড়ে শোনানো হয় তাদের।
কারাবিধি অনুযায়ী, তার সাত দিনের মধ্যে প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে হয়। নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার আগেই হান্নানের আবেদন পাওয়ার কথা জানাল কারা কর্তৃপক্ষ।
এই মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামি দেলোয়ার হোসেন রিপন সিলেট জেলা কারাগারে রয়েছেন। তিনিও রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চেয়ে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছেন।
২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে হজরত শাহজালালের (র.) মাজারে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর উপর গ্রেনেড হামলা হয়। তাতে হাই কমিশনার বেঁচে গেলেও নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ তিনজন।
সিলেটের আদালত ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর দেওয়া রায়ে ৫ আসামির মধ্যে মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপনের মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।
প্রায় সাত বছর পর গত বছরের ৬ জানুয়ারি এ মামলায় আসামিদের আপিল ও ডেথরেফারেন্সের শুনানি শুরু হয়। বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল রেখে ১১ ফেব্রুয়ারি রায় দেয় হাই কোর্ট। গত বছরের ২৮ এপ্রিল হাই কোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়।
তার বিরুদ্ধে মুফতি হান্নানদের আপিল গত বছরের ৭ ডিসেম্বর খারিজ হয়ে যায়। এরপর গত ১৭ জানুয়ারি আসামিরা রিভিউ আবেদন করেছিলেন।
হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামীর শীর্ষনেতা মুফতি হান্নান বাংলাদেশে জঙ্গি কর্মকাণ্ডের শুরুর দিকের হোতা হিসেবেই পরিচিত। গোপালগঞ্জের মুফতি হান্নানের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার একাধিক মামলাও বিচারাধীন।
মুফতি হান্নানের মৃত্যুদণ্ড দ্রুত কার্যকরের দাবিতে তার এলাকা গোপালগঞ্জে সোমবার বিক্ষোভ হয়েছে।