1. sardardhaka@yahoo.com : adminmoha : Sardar Dhaka
  2. nafij.moon@gmail.com : Nafij Moon : Nafij Moon
  3. rafiqul@mohajog.com : Rafiqul Islam : Rafiqul Islam
  4. sardar@mohajog.com : Shahjahan Sardar : Shahjahan Sardar
সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১৯ পূর্বাহ্ন

নাসিরপুর জঙ্গি আস্তানায় ৭-৮ মৃতদেহ

মহাযুগ নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ, ২০১৭
  • ১৫২ বার

প্রতিবেদক : মৌলভীবাজারের নাসিরপুরের জঙ্গি আস্তানায় ৭ থেক ৮টি মৃতদেহ রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। ওই জঙ্গি আস্তানাটিতে গতকাল বুধবার থেকে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা শেষে বিকেলে সিটিটিসি আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি। সিটিটিসি’র অঙ্গভুক্ত সোয়াট টিম এ অভিযান পরিচালনা করে।

মনিরুল ব্রিফিং এ বলেন, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মৌলভীবাজার পুলিশ নাসিরপুরের ফতেপুরের জঙ্গি আস্তানাটি ঘেরাও করে রাখে। গতকাল বুধবার তারা সেখানে পৌঁছায়। ঘটনাস্থলে আমিসহ সোয়াট ও বোম্ব ডিজপোজাল ইউনিটের ডিসি এখানে উপস্থিত রয়েছি। গতকাল সোয়াট আসার পরে অভিযানের গুরুত্ব ও যে ধরনের বিস্ফোরকের ভান্ডার সেটি বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে সিদ্ধান্ত ছিল, ট্যাকটিকাল অপারেশন সোয়াট টিম করবে। আর এপিবিএন, কাউন্টার টেররিজমের অন্যান্যরা সাপোর্টিভ জায়গায় কাজ করবে। এরপর জঙ্গিরা ১২টা বিস্ফোরণ ঘটায়। সোয়াট বুধবার বিকেলে অভিযান শুরুর আগে মাইকের সাহায্যে আত্মসমর্পণের জন্য তাদের বারবার অনুরোধ জানায়। এটা আশেপাশের মানুষও শুনেছেন। আর ওই সময়টাতেই তাদের পক্ষ থেকে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ শুরু হয়।

মনিরুল আরও জানান, কিছুক্ষণ আগে (বৃহস্পতিবার দুপুরে) বাড়িটিতে প্রবেশ সম্ভব হয়। বাড়িটিতে গ্রেনেড ও শক্তিশালী বোমা ছড়ানো ছিটানো ছিল। জঙ্গিরা শক্তিশালী বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। কাল (বুধবার) সোয়াট অভিযান শুরু করলে পালানোর পথ নাই দেখে সম্ভবত বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ওরা সপরিবারে আত্মহনন করেছে।

তিনি বলেন, সেখানে সাত আটটি ডেডবডি (মৃতদেহ) হতে পারে। আপনারা চিত্র ধারণ করলেও তা প্রচার করতে পারবেন না এতটাই বীভৎস হয়ে গেছে দেহগুলো।

মনিরুল আরও জানান, আমরা সূত্র ধরে অনুসন্ধান করছিলাম বলে নিশ্চিত হয়েই বলতে পারি, নব্য জেএমবি সদস্যরাই এ বাড়িটিতে আত্মগোপন করেছিল।

ড্রোনের ব্যবহার প্রসঙ্গে সিটিটিসি’র প্রধান বলেন, ঢাকা থেকে ড্রোন এনে বাড়িটির ভেতরের ছবি তোলা হয়েছে। এই ছবি দেখে প্রবেশ দ্বারসহ স্ট্র্যাটেজিক পয়েন্টে যেসব বোমা ও গ্রেনেড জঙ্গিরা রেখেছিল সেগুলো নিষ্ক্রিয় করা সম্ভব হয়েছে।

এর আগে জঙ্গিদের ব্যবহৃত বিস্ফোরক দ্রব্যের সঙ্গে নাসিরপুরে পাওয়া বিস্ফোরকের সাদৃশ্য রয়েছে জানিয়ে মনিরুল বলেন, সীতাকুণ্ডের অভিযানে যে ধরনের আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) পাওয়া গিয়েছিল, এখানকার আইইডিগুলোও একইরকম। এছাড়া, এই অভিযানে অবিস্ফোরিত যে বোমা পাওয়া গিয়েছে, সেগুলোর সঙ্গে বিমানবন্দরের ঘটনায় পাওয়া বোমার মিল রয়েছে।’

জঙ্গি আস্তানায় নিহত জঙ্গিদের মধ্যে কয়জন পুরুষ ও কয়জন নারী, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘নিহতদের মধ্যে কয়জন পুরুষ বা কয়জন নারী, তা বলা যাচ্ছে না। কারণ নিহত জঙ্গিদের শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে।’

নাসিরপুরে জঙ্গি আস্তানা

আতিয়া ভবনের জঙ্গিদের সঙ্গে নাসিরপুরের জঙ্গিদের কোনও যোগসূত্র রয়েছে কিনা জানতে চাইলে সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘তারা সবাই নব্য জেএমবির সদস্য।’

মৌলভীবাজারের নাসিরপুরের আস্তানাটিকে জঙ্গিরা হাইডআউট হিসেবে ব্যবহার করছিল বলে ধারণা করছে সিটিটিসি। এ প্রসঙ্গে মনিরুল বলেন, ‘জঙ্গিদের এই ঘাঁটি সম্পর্কে আমাদের কোনও ধারণা ছিল না। যে আস্তানার সূত্র ধরে আমরা কাজ করেছি, সেটিও ঘেরাও করে রাখা আছে। এখনও সেখানে অভিযান চালানো হয়নি।’ এই মুহূর্তে মৌলভীবাজারে জঙ্গিদের আর কোনও আস্তানার তথ্য পুলিশের কাছে নেই বলেও জানান তিনি।

নাসিরপুরের আস্তানাটিতে যে ব্যক্তি কেয়ারটেকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন, তার সঙ্গে জঙ্গিদের সাংগঠনিক আদর্শগত মিল আছে কিনা জানতে চাইলে সিসিটিসি প্রধান বলেন, ‘এটি এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। এটা তদন্তসাপেক্ষ বিষয়। পরে হয়তো বিষয়টি বোঝা যাবে।’

জঙ্গিরা কখন সুইসাইড করেছে জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল বিকালের দিকে সোয়াত যখন অভিযান শুরু করে তখনই পালানোর পথ না পেয়ে আত্মহননের সময়টিকে বেছে নেয় তারা।’

নাসিরপুরের জঙ্গিদের সম্পর্কে মনিরুল বলেন, ‘জঙ্গিরা স্থানীয় নয়, তারা কারোর সঙ্গে মিশত না। আশপাশের কেউ তাদের চেনেও না। তারা সারাদিন বাসায় থাকত। জঙ্গিদের কেউ চাকরি করত না, তাদের সন্তানদেরও কেউ স্কুলে যেতে দেখেনি।’

মৌলভীবাজারের বড়হাট ও কুমিল্লার কোটবাড়ীতে ঘিরে রাখা জঙ্গি আস্তানায় কখন অভিযান চালানো হতে পারে, সে প্রসঙ্গে মনিরুল বলেন, ‘বড়হাটের আস্তানায় সোয়াত আজ সন্ধ্যার আগেই অভিযান শুরু করতে পারে, যদি তারা সেভাবে প্রস্তুত হয়। তা না হলে কাল (শুক্রবার) এই অভিযান পরিচালনা করা হবে। কারণ অন্ধকার হয়ে গেলে বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি তৈরি হয়। আর আবহাওয়া ভালো থাকলে আগামীকাল (শুক্রবার) সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গেই কুমিল্লার আস্তানায় অভিযান শুরু করতে পারব।’

এর আগে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি কামরুল আহসান জানান, মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে বাড়ি দুটি ঘেরাও করে। ঘেরাওয়ের সঙ্গে সঙ্গে গ্রেনেড বিস্ফোরণের মাধ্যমে জঙ্গিরা তাদের উপস্থিতি জানান দেয়। এ বিষয়ে সোয়াট টিম উপযুক্ত। তাই তাদের অনুরোধ করি জঙ্গিবিরোধী অভিযানটি পরিচালনার জন্য।

এ জাতীয় আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2023 Mohajog