প্রতিবেদক: নিজের বাল্য বিয়ে ঠেকিয়ে দেয়া সেই বাংলাদেশি কিশোরী সাহসী নারী আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হলেন। ঝালকাঠির মেয়ে শারমিন আক্তার মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের হাত থেকে এ পুরস্কার গ্রহণ করেন।
বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেক্রেটারি অব স্টেটস ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ (আইডব্লিউসি) ২০১৭’ পুরস্কার গ্রহণ করেন শারমিন।
শারমিন ছাড়াও এ বছর আরো বারোটি দেশের বারো জন নারীকে দেয়া হয় এই পুরস্কার। এদের মধ্যে রয়েছেন মানবাধিকার কর্মী, এনজিও কর্মী, রাজনীতিবিদ, ব্লগার থেকে শুরু করে সৈনিক পর্যন্ত।
শারমিন আলোচনায় এসেছিলেন গত বছর নভেম্বর মাসে।
তিনি বিয়েতে রাজী না হওয়ায় তার মা তাকে পাত্রের সঙ্গে কয়েকদিন একটি কক্ষে আটকে রেখেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।
এক পর্যায়ে বন্দী দশা থেকে পালিয়ে এসে তিনি মায়ের বিরুদ্ধেই মামলা ঠুকে দেন।
নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় পনেরো বছর বয়সে তার মা তাকে বিয়ে দেয়ার আয়োজন করেছিলো।
স্কুলের বন্ধু, সাংবাদিক এবং থানা পুলিশের সহায়তা নিয়ে শারমিন আকতার মায়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন।
গত বছর নভেম্বর মাসে টেলিফোনে শারমিন আক্তার বলেছিলেন, আমি বিয়ের জন্য উপযুক্ত বয়সে ছিলাম না। এই কিশোরী বয়সে একজন বয়স্ক লোকের সাথে আমার সংসার করা সম্ভব ছিল না। তখন আমাকে আটকিয়ে রেখে শারীরিক এবং মানসিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছিল। কিন্তু আমি এই পরিস্থিতি থেকে আমার জীবনকে বাঁচাতে মায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলাম।
তার দায়ের করা মামলায় তার মা এবং কথিত পাত্রকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে শারমিন আক্তারের সম্পর্কে বলা হয়েছে, মাত্র পনের বছর বয়েসেই শারমিন সাহসিকতার সাথে তার মায়ের তাকে বিয়ে দেবার উদ্যোগ ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন এবং নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যাবার অধিকার সুরক্ষিত করেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ায় এ ধরণের চাপের মুখে থাকা বহু কিশোরীর জন্য তিনি একটি উদাহরণ তৈরি করেছিলেন।
শারমিন এখন রাজাপুর পাইলট স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী।
তিনি বড় হয়ে আইনজীবী হতে চান এবং বাল্য বিয়ের বিরুদ্ধে তার প্রচারণা অব্যাহত রাখতে চান।
বিবিসি অবলম্বনে