প্রতিবেদক : প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের ‘ভয়ঙ্কর দুর্নীতিবাজ’ হিসেবে উল্লেখ করে এসব অপরাধী থেকে দূরে থাকতে শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল। শনিবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে শিক্ষার্থীদের বিতর্ক, কার্টুন, রচনা ও পোস্টার প্রতিযোগিতা এবং পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, “পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস এক প্রকারের ভয়ঙ্কর দুর্নীতি। ছাত্র-ছাত্রীদের এই দুর্নীতি যাতে স্পর্শ না করে সেদিকে সকলকে লক্ষ্য রাখতে হবে।”
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “সৎ পথে থাকলে সমাজে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে। কিন্তু অসৎ পথে থাকলে কেঁচো, ইঁদুরের মতো মাথা গুঁজে থাকতে হবে। ভালো মানুষ ও খারাপ মানুষের পার্থক্য কৃত্রিম। সব মানুষই ভালো কেবল পারিপার্শ্বিক পরিবেশের কারণেই মানুষ খারাপ হয়।”
পৃথিবীর অনেক দেশে জেলখানা তুলে দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে এই শিক্ষাবিদ বলেন, “সেসব দেশে অপরাধী পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের দেশেও একদিন জেলখানা থাকবেনা। কেউ অপরাধ করবে না।
“বর্তমান দুর্নীতি দমন কমিশন অপরাধীদের ধরে যেমন জেলখানায় ঢোকাচ্ছে, পাশাপাশি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে অপরাধে জড়িয়ে না পড়ে সে বিষয়েও কাজ করছে কমিশন,” বলেন জাফর ইকবাল।
বই পড়াকে উৎসাহিত করে জ্ঞানী-গুণীজনের লেখা বই পড়তে শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, “আমাদের সম্পদ হলো আগামী প্রজন্ম, তাই আমরা তাদের নৈতিক মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচিতে নতুন প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করছি। এরাই হবে আমাদের ভবিষ্যৎ জনসম্পদ, কিন্ত প্রশ্নফাঁসের পরীক্ষা তাদেরকে জনআপদে পরিণত করতে পারে।”
তিনি বলেন, “পড়াশুনার মাধ্যমে জ্ঞানার্জন করতে হবে। পেশিশক্তি কোনো শক্তি নয়, জ্ঞান শক্তির কোনো বিকল্প নেই। সমাজে শক্তিমানরাই টিকে থাকে, দুর্বলরা বাঁচতে পারে না। তাই শক্তি অর্জন করতে হবে। এই শক্তি অর্জন করতে হলে সুশিক্ষার কোনো বিকল্প নেই।”
‘দুর্নীতি হলে শেষ, নিজে বাঁচবো, বাঁচবে দেশ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে গত ২৬ মার্চ থেকে শুরু হওয়া দুর্নীতি প্রতিরোধ সপ্তাহ শনিবার শেষ হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দুদক কমিশনার নাসির উদ্দীন আহমেদ, এ এফ এম আমিনুল ইসলাম, সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল, মহাপরিচালক মো. শামসুল আরেফিন, সাভার মডেল কলেজের ছাত্রী মুসলিমা আক্তার দিনা, রাজশাহী কলেজের ছাত্রী ওয়াহিদা মাহজাবীন, খুলনা জিলা স্কুলের ছাত্র ইয়াছিন আরাফাত লিমন, দুদক ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক নাসিম আনোয়ার প্রমুখ।
শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় ছয়টি ক্যাটাগরিতে মোট ২৩ জনকে পুরস্কার হিসেবে নগদ অর্থ, ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট তুলে মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।