আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিশরে কপটিক খ্রিস্টানদের দুটি গির্জায় বোমা হামলায় অন্তত ৩৬ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে অন্তত শতাধিক মানুষ। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল নাইল নিউজ এর খবরে বলা হয়, রোববার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে এ দুটি হামলার ঘটনা ঘটে। প্রথম নীল নদের তীরবর্তী শহর তানতায় সেন্ট জর্জ কপটিক চার্চে হামলায় অন্তত ২৫ জন নিহত এবং ৭৮ জন আহত হন। কয়েক ঘণ্টা পর আলেক্সান্দ্রিয়ার সেন্ট মার্ক কপটিক চার্চে দ্বিতীয় হামলায় তিন পুলিশসহ অন্তত ১১ জন নিহত এবং ৩৫ জনের বেশি মানুষ আহত হন।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।
আইএস এর মুখপত্র আমাক বলছে, ইসলামিক স্টেটের অংশ একটি দল মিশরের তানতা এবং আলেক্সান্দ্রিয়া শহরের দুইটি গির্জায় হামলা চালিয়েছে।
আলেক্সান্দ্রিয়ার গির্জায় হামলার সময় কপটিক গির্জার প্রধান পোপ তাওয়াদ্রোস (দ্বিতীয়) সেখানে একটি ম্যাসে অংশ নিচ্ছিলেন। তবে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী পোপ তাওয়াদ্রোস অক্ষত আছেন।
পোপের সচিব বলেন, একজন আত্মঘাতী হামলাকারী চার্চের বাইরে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়।
আর তানতায় প্রথম বিস্ফোরণ সম্পর্কে নীল নিউজকে প্রাদেশিক গভর্নর আহমদ দেইফ বলেন, “হয় বোমাটি গির্জার ভেতর পেতে রাখা হয়েছিল অথবা কেউ আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে।”
মাত্র এক সপ্তাহ পর কপটিক ইস্টার। এছাড়া এ মাসেই পোপ ফ্রান্সিসের মিশর সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে। রোববারের এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন পোপ।
গত কয়েক বছর ধরে মিশরের সংখ্যালঘু খ্রিস্টানদের লক্ষ্য করে প্রাণঘাতী হামলা চালাচ্ছে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গিরা। গত বছরের ডিসেম্বরে কায়রোর এক কপটিক গির্জায় প্রার্থনা চলাকালীন এক বোমা বিস্ফোরণে ২৫ জন নিহত হয়েছিল।
তানতায় হামলার প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন ফোনে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “গির্জার হলে বিকট শব্দে বোমা বিস্ফোরণ হওয়ার পর কক্ষটি আগুন ও ধোঁয়ায় ভরে যায়। অনেকে গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের অনেকের পেট থেকে নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে গেছে, অনেকের পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।”
ঘটনার সময় সেন্ট জর্জ গির্জার ওই কক্ষে অবস্থান করা একজন খ্রিস্টান নারী বলেন, “কক্ষের পুরো মেঝে রক্তে ভেসে গেছে। চারিদিকে মানবদেহের ছিন্নভিন্ন অংশ পড়ে আছে।”
মিশরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল-সিসি এবং প্রধানমন্ত্রী শেরিফ ইসমাইলের সেন্ট জর্জ গির্জায় যাওয়ার কথা রয়েছে বলেও রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়। এ হামলার পর সিসি জরুরি জাতীয় প্রতিরক্ষা কাউন্সিলের বৈঠকও ডেকেছেন।